বগুড়ার সোনাতলায় তৈরি হচ্ছে ৮২ হাত দীর্ঘ বাইচের নৌকা

সোনাতলা (বগুড়া) প্রতিনিধি : বগুড়ার সোনাতলায় দীর্ঘ ৮২ হাত বিশাল আকৃতির বাইচের নৌকা তৈরি করা হচ্ছে। দু’এক দিনের মধ্যে নৌকা তৈরির কাজ শেষ হবে। নৌকাটি দেখার জন্য সোনাকানিয়া বাঙালি নদীর তীরে ভিড় জমাচ্ছেন উৎসুক মানুষ। বাইচের নৌকা তৈরি করা ওই গ্রামবাসীর ঐতিহ্য বলে জানানো হয়েছে। 
উপজেলার জোড়গাছা ইউনিয়নের সোনাকানিয়া গ্রামটি উপজেলা সদর থেকে প্রায় ১১ কিলোমিটার দক্ষিণে বাঙালি নদীর তীরে অবস্থিত।

গ্রামের ঐতিহ্য ধরে রাখতে তারা এবারও বাইচের নৌকা তৈরির উদ্যোগ নিয়েছেন। ২২ পাড়ার গ্রামটিতে প্রায় আট হাজার মানুষের বসবাস। শিক্ষা-দীক্ষায় গ্রামটি অন্য সব গ্রামের চেয়ে পিছিয়ে নেই, তাই আনন্দ-বিনোদনে গ্রামবাসী একাট্টা।

প্রতি বর্ষা মৌসুমে গ্রামবাসীদের উদ্যোগে স্থানীয় বাঙালি নদীতে নৌকা বাইচের আয়োজন করা হয়। এছাড়াও খেলাধুলা ও সাংস্কৃতিক অঙ্গনে তাদের নৈপুণ্য দেখার মতো। চলতি বছরের নভেম্বর মাসের শুরুতে এবারও প্রায় ৮২ হাত দীর্ঘ একটি বাইচের নৌকা তৈরির কাজ শুরু করা হয়। বর্তমানে নৌকা তৈরির প্রায় ৯৮ ভাগ কাজ শেষ হয়েছে।

আগামী দু’এক দিনের মধ্যে নৌকা তৈরির কাজ শেষ হবে। গ্রামবাসীদের উদ্যোগে নৌকা তৈরির তহবিল গঠন করা হয়। নৌকা তৈরিতে কুড়িগ্রামের পাঁচজন কারিগর কাজ করে যাচ্ছেন। কারিগরদের সাথে নৌকা তৈরিতে চুক্তি হয়েছে ১ লাখ ৩৫ হাজার টাকা। এছাড়াও নৌকা তৈরির জন্য যশোর থেকে শাল, মেহগনি, শিশু ও পাওয়ো গাছের ১৫০ সেফটি কাঠ ব্যবহার করা হয়েছে। কাঠসহ নির্মাণ সামগ্রী ও কারিগরদের মজুরি বাবদ ব্যয় হয়েছে ৩ লাখ ৮২ হাজার ৬শ’ টাকা।

বগুড়ার সোনাতলায় তৈরি হচ্ছে ৮২ হাত দীর্ঘ বাইচের নৌকা

পাবনার সুজানগরে রিভলবারসহ জনতার হাতে দুই যুবক আটক

বিশ্বকাপে আমিরুলের দ্বিতীয় হ্যাটট্রিক, দক্ষিণ কোরিয়াকে রুখে বাংলাদেশের চমক

কুড়িগ্রামের নৌকা তৈরির কারিগর তাইজুল ইসলাম ও মাইদুল ইসলাম বলেন, গত ১৫ দিন ধরে নৌকাটি তৈরি করা হচ্ছে। আজকালের মধ্যে কাজ শেষ হবে। নৌকাটি তৈরি করতে প্রায় ১৫০ সেফটি কাঠ ব্যবহার করা হয়েছে। এছাড়াও স্টিলের শিট ব্যবহার করা হয়েছে। নৌকাটি তৈরি করতে তাদের পারিশ্রমিক ১ লাখ ৩৫ হাজার টাকা চুক্তি হয়েছে।

এ বিষয়ে বাইচের নৌকা তৈরি কমিটির সভাপতি এড. জাহিদুল ইসলাম মুন্নু ও সাধারণ সম্পাদক এড. আব্দুল ওয়াহেদ বলেন, বাইচের নৌকা তৈরি করা তাদের গ্রামবাসীদের ঐতিহ্য। স্বাধীনতার পর থেকে ওই গ্রামের বাসিন্দাদের উদ্যোগে নৌকা তৈরি, খেলাধুলার আয়োজন করা হয়। এমনকি দেশের বিভিন্ন স্থানে নৌকা বাইচে অংশ নিয়ে ১ম স্থান অর্জন করে বহু পুরস্কার লাভ করেছেন এই গ্রামের মানুষ।

আয়োজক কমিটির সদস্য আতোয়ার রহমান, তাহেরুল ইসলাম, মন্তেজার রহমান, মেহেদী হাসান বলেন, আমাদের গ্রামের যুব সমাজ খেলাধুলা ও সাংস্কৃতিক অঙ্গনে ঐতিহ্য রেখে যাচ্ছে। আগামী বুধবার আনুষ্ঠানিকভাবে নৌকাটি বাঙালি নদীতে বাইচের জন্য নামানো হবে।