প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ের গাছে ঝুলছিল রিকশাচালকের ঝুলন্ত মরদেহ
সুনামগঞ্জ জেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয় চত্বরের উঁচু একটি গাছের মগডাল থেকে সুজন মিয়া (২২) নামের এক রিকশাচালক যুবকের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।
শনিবার (২২ নভেম্বর) সকাল ১০টার দিকে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে বিশেষ কায়দায় মরদেহটি উদ্ধার করে।
নিহত সুজন মিয়া নেত্রকোনা জেলার কলমাকান্দা উপজেলার নয়াচৈতা গ্রামের সঞ্জু মিয়ার ছেলে। জীবিকার তাগিদে তিনি সুনামগঞ্জ পৌর শহরের ষোলোঘর এলাকায় তার চাচাতো বোন আসমা বেগমের বাসায় থাকতেন।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সপ্তাহের ছুটির দিন হওয়ায় শনিবার সকাল থেকেই প্রাণিসম্পদ কার্যালয় চত্বরে ছিল সুনসান নীরবতা। পুলিশ ধারণা করছে, এই নির্জনতার সুযোগ নিয়েই ভোর ৬টা থেকে সকাল ৮টার মধ্যে কোনো এক সময় আত্মহননের পথ বেছে নেন ওই যুবক। সাধারণত অফিস চলাকালীন এখানে মানুষের আনাগোনা থাকলেও, শনিবার ভোরে এলাকাটি ছিল সম্পূর্ণ ফাঁকা। ফলে, তিনি নির্বিঘ্নে অফিস প্রাঙ্গণে প্রবেশ করতে পেরেছিলেন বলে মনে করা হচ্ছে। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে পথচারীদের নজরে আসে গাছের সুউচ্চ ডালে ঝুলন্ত এক যুবকের দেহ। মুহূর্তেই বিষয়টি জানাজানি হলে স্থানীয়রা পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসকে খবর দেয়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে মরদেহ উদ্ধার করে।
নিহতের পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, মাত্র ১০-১২ দিন আগে ঢাকা থেকে সুনামগঞ্জে আসেন সুজন। ঢাকায় অবস্থানকালে সুজন মিয়া গোপনে বিয়ে করেছিলেন। তার স্ত্রী বর্তমানে ঢাকার একটি পোশাক কারখানায় কর্মরত। সম্প্রতি সুজন তার স্ত্রীকে সুনামগঞ্জে নিয়ে আসতে চাইলেও স্ত্রী তাতে রাজি হননি। এ নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে মনোমালিন্য চলছিল।
নিহতের চাচাতো বোন আসমা বেগম বলেন, ‘সকালে জ্যাকেট পরে স্বাভাবিকভাবেই সে ঘর থেকে বের হয়েছিল। কিছু সময় পরে খবর পাই প্রাণিসম্পদ অফিসের গাছে কার লাশ ঝুলছে, তখন দৌড়ে আসি ঘটনাস্থলে। এসে দেখি আমার ভাই সুজনের মরদেহ ঝুলছে গাছের ডালে। তার এই মৃত্যু কোনোভাবেই মানতে পারতেছি না।’
তিনি আরও বলেন, ‘সুজন কাউকে কিছু না জানিয়েই ঢাকায় বিয়ে করেছিল। ১০-১২ দিন আগে সুনামগঞ্জ আইসা সে জানায় সে তার বউকে সুনামগঞ্জে আনতে চেয়েছিল, কিন্তু বউ আসতে চায়নি। এ নিয়ে তার মন খারাপ ছিল।’
এ বিষয়ে সুনামগঞ্জ সদর মডেল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মাহমুদুল হাসান বলেন, ‘গাছের উঁচু ডাল থেকে মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে, তাতে প্রাথমিকভাবে এটি আত্মহত্যা বলেই মনে হচ্ছে। কারণ, জোর করে কাউকে এত উঁচুতে তুলে ফাঁস লাগানো দুষ্কর। তবে মৃত্যুর সঠিক কারণ নিশ্চিত হতে মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। সুরতহাল ও ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন পেলে বিস্তারিত জানা যাবে।’
মন্তব্য করুন

নিউজ ডেস্ক
_medium_1763805863.jpg)







