জয়পুরহাটের কালাইয়ে হাতের ঠেলায় নড়ে ইটের গাঁথুনি : প্রাচীর ভেঙে দিল জনতা

কালাই (জয়পুরহাট) প্রতিনিধি : জয়পুরহাটের কালাই সরকারি ময়েন উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়ের ৬২৫ ফুট প্রাচীর নির্মাণে অনিয়মের অভিযোগ ওঠেছে। ইট গাঁথুনির পর নড়ে ওঠায় উত্তেজিত জনতা সেই প্রাচীর হাতের ঠেলা দিয়ে ভেঙে ফেলেছে।
উত্তেজিত জনতার অভিযোগ, পরিমাণে কম সিমেন্ট দিয়ে ইট গাঁথুনি করায় প্রাচীর নড়ে ওঠে। ঝুঁকি থাকায় জনগণ তা হাত দিয়ে ঠেলে ভেঙে ফেলেছে। সিডিউল মোতাবেক কাজ করতে দাবি করেছেন তারা। আর ঠিকাদার বলছেন ভিন্ন কথা, গাঁথুনির পর জমাট হতে সময় লাগে, তার আগেই জনগণ প্রাচীর ভেঙে ফেলেছে। আসলে সিডিউল অনুযায়ীই কাজ করা হচ্ছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর থেকে কালাই সরকারি ময়েন উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রাচীর নির্মাণের জন্য ২০ লাখ টাকা বরাদ্দ হয়। দরপত্রের মাধ্যমে ওই কাজের দায়িত্ব পান জয়পুরহাটের মেসার্স এমরান কনস্ট্রাকশন নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। কার্যাদেশ পেয়ে কাজ শুরু করেছে ঠিকাদার। এরইমধ্যে বিমের কাজ শেষ হয়েছে এবং ইট গাঁথার কাজ শুরু করেছে। সিডিউল অনুযায়ী কাজ হচ্ছে না বলে অভিযোগ স্থানীয়দের। ইট গাঁথার পর প্রাচীর নড়ে। ঝুঁকি মনে করে স্থানীয় লোকজন প্রাচীরের ইটগুলো হাত দিয়ে ঠেলা দিয়ে ভেঙে ফেলেছে।
প্রাচীর ভাঙার সময় উপস্থিত ছিলেন প্রত্যক্ষদর্শী আব্দুল মোত্তালিব হোসেন। তিনি বলেন, যেখানে এক কড়াই সিমেন্ট ও চার কড়াই বালু মিক্সার করে ইট গাঁথার কথা, সেখানে মিস্ত্রিরা এক কড়াই সিমেন্টের সাথে আট কড়াই বালু দিয়ে কাজ করছে। সে কারণেই জমাট না হয়ে ইটগুলো হাতের ঠেলায় খুলে যাচ্ছে এবং বালু ও সিমেন্ট পড়ে যাচ্ছে। যেকোন সময় প্রাচীর ভেঙে পড়ে ক্ষতির শঙ্কা রয়েছে।
আরও পড়ুনঠিকাদারের নিয়োজিত কাজ দেখভালের দায়িত্বে থাকা রবিউল ইসলাম বলেন, সিডিউল অনুযায়ী কাজ করা হচ্ছে। শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের প্রকৌশলী ও বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের উপস্থিতিতেই কাজ হচ্ছে। স্থানীয় লোকজন অযাচিত ক্ষিপ্ত হয়ে প্রাচীর ভেঙে ফেলেছে। আসলে ইট গাঁথার পর জমাট হতে কমপক্ষে ২৪ ঘন্টা সময় লাগে। তার আগেই লোকজন প্রাচীর ভেঙে ফেলেছে। বিষয়টি প্রকৌশলীকে জানানো হয়েছে।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক (ভারপ্রাপ্ত) সাইফুল ইসলাম বকুল বলেন, কাজ দেখভালের জন্য বিদ্যালয় থেকে তিন সদস্যর একটি কমিটি করে দেওয়া হয়েছে। তারা এই কাজ দেখভাল করছেন। কাজ এখনও শেষই হয়নি, তার আগেই লোকজন এসে প্রাচীর ভেঙে ফেলেছে। কেন ভেঙে ফেলা হয়েছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, কাজের মান খারাপ বলে ভেঙে ফেলেছে।
জয়পুরহাট শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের উপ-সহকারী প্রকৌশলী আবু রায়হান বলেন, বিষয়টি আমি জানি না। খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মন্তব্য করুন