ময়মনসিংহের ভালুকায় দিপু চন্দ্র দাস (২৮) নামের এক যুবককে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় আরও দুজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এ নিয়ে র্যাব-পুলিশের পৃথক অভিযানে এখন পর্যন্ত গ্রেফতার হয়েছেন মোট ১২ জন।
আজ রোববার (২১ ডিসেম্বর) দুপুরে জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের কার্যালয় থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
এর আগে শনিবার (২০ ডিসেম্বর) রাতে উপজেলার হবিরবাড়ি ইউনিয়নের কাশর এলাকা থেকে থেকে আশিকুর রহমান (২৫) ও কাইয়ুম (২৫) নামের দুজনকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
তার আগে শুক্রবার (১৯ ডিসেম্বর) দিনগত মধ্যরাতে জেলার ভালুকা উপজেলার স্কয়ার মাস্টারবাড়ি এলাকায় পৃথক অভিযান চালিয়ে ১০ জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ ও র্যাব।
গ্রেফতার ব্যক্তিরা হলেন তারেক হোসেন (১৯), লিমন সরকার, মানিক মিয়া (২০), এরশাদ আলী (৩৯), নিঝুম উদ্দিন (২০), আলমগীর হোসেন (৩৮), মিরাজ হোসেন আকন্দ (৪৬), আজমল হাসান সগীর (২৬), শাহিন মিয়া (১৯) ও মো. নাজমুল (২১)।
আলমগীর হোসেন ভালুকায় অবস্থিত পাইওনিয়ার নিট কম্পোজিট কারখানার ফ্লোর ম্যানেজার ও মিরাজ হোসেন আকন কারখানার ইনচার্জ।
ময়মনসিংহের আদালত পরিদর্শক (তদন্ত) পীরজাদা শেখ মো. মোস্তাছিনুর রহমান বলেন, গ্রেফতার ১০ জনের মধ্যে তিনজনের বিরুদ্ধে পাঁচদিনের রিমান্ড আবেদন করা হয়েছে। সোমবার (২২ ডিসেম্বর) আদালতে রিমান্ড শুনানি অনুষ্ঠিত হবে।
আরও পড়ুন
এ বিষয়ে ময়মনসিংহের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, মব ভায়োলেন্সে দিপু চন্দ্র দাসকে পিটিয়ে নির্মমভাবে হত্যা করে মরদেহে অগ্নিসংযোগ করা হয়। এ ঘটনায় জড়িতদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে।
ময়মনসিংহ র্যাব- ১৪ সদর দপ্তরের অধিনায়ক নয়মুল হাসান জানান, ধর্ম নিয়ে কটূক্তির অভিযোগে দিপু চন্দ্র দাসকে দেশীয় অস্ত্র দিয়ে আঘাতসহ কিলঘুসির মাধ্যমে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। এতেও ক্ষান্ত না হয়ে মরদেহে আগুন দেওয়া হয়েছে। দিপু চন্দ্র দাসের বিরুদ্ধে ধর্ম নিয়ে কটূক্তির যে অভিযোগ তোলা হয়েছে তার কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি। কারও সঙ্গে কথার সময় কিংবা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ধর্ম নিয়ে কটূক্তি করা হয়েছে কি না সেটি সুনির্দিষ্টভাবে কেউ জানাতে পারছে না। আইন নিজের হাতে তুলে নিয়ে অপরাধ করা হয়েছে।
পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠায়। এ ঘটনায় নিহতের ছোট ভাই অপু চন্দ্র দাস ভালুকা মডেল থানায় বাদি হয়ে ১৫০ জনকে অজ্ঞাতপরিচয় আসামি করে মামলা করেন।
নিহত দিপু চন্দ্র দাস জেলার তারাকান্দা উপজেলার মোকামিয়া কান্দা গ্রামের রবি চন্দ্র দাসের ছেলে। তিনি দুই বছর ধরে পাইওনিয়ার নিট কম্পোজিট কারখানায় কর্মরত ছিলেন।