গাইবান্ধার সাঘাটায় মিষ্টি আলুর আধিপত্য বদলাচ্ছে গ্রামীণ অর্থনীতি
সাঘাটা (গাইবান্ধা) প্রতিনিধি: এক সময় যে জমিগুলো ছিল অনাবাদি কিংবা অল্প ফলনের ধানের ওপর নির্ভরশীল, সেই জমিগুলোতেই এখন মিষ্টি আলুর সবুজ বিপ্লব। গাইবান্ধার সাঘাটা উপজেলার কচুয়া ইউনিয়নের পশ্চিম কচুয়া ও রামনগর মৌজা জুড়ে মিষ্টি আলু চাষ বদলে দিয়েছে এলাকার গ্রামীণ অর্থনীতির চিত্র।
স্থানীয় কৃষকদের ভাষ্য মতে, পাঁচ বছর আগেও এই এলাকায় মিষ্টি আলু চাষ ছিল খুবই সীমিত। তখন কৃষকরা প্রধানত ধান চাষের ওপর নির্ভরশীল ছিলেন। কিন্তু জমির প্রকৃতি ধান চাষের জন্য তেমন উপযোগী না হওয়ায় ফলন হতো কম। অনেক জমি থাকত পরিত্যক্ত। উৎপাদন খরচের তুলনায় লাভ না থাকায় কৃষকরা পড়তেন হতাশায়।
পরিস্থিতির পরিবর্তন আসে মিষ্টি আলু চাষের বিস্তারের মধ্যদিয়ে। বর্তমানে এই দুই মৌজায় প্রায় ২১৬ হেক্টর জমিতে উন্নত জাতের হাইব্রিড মিষ্টি আলুর চাষ হচ্ছে। কৃষকরা জানান, প্রতি শতকে গড়ে আড়াই থেকে তিন মণ আলু উৎপাদন হচ্ছে। বাজারে প্রতিমণ আলু ১ হাজার থেকে ১ হাজার ৪শ’ টাকা দরে বিক্রি হওয়ায় লাভের অঙ্ক উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে। ফলে কৃষকের আস্থার জায়গা পূরণ করছে মিষ্টি আলু।
মিষ্টি আলু চাষের বড় সুবিধা হলো এর স্বল্প মেয়াদ। মাত্র ৯০ দিনের মধ্যেই ফসল ঘরে তোলা যায়। অন্য ফসলের তুলনায় উৎপাদন খরচ কম হওয়ায় অল্প পুঁজিতে বেশি লাভ পাওয়া সম্ভব। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো জমি থেকেই আলু বিক্রি করা যায়। পাইকাররা সরাসরি ক্ষেত থেকে আলু সংগ্রহ করে দেশের বিভিন্ন জেলায় নিয়ে যাচ্ছেন।
আরও পড়ুনউপ-সহকারী উদ্ভিদ সংরক্ষণ কর্মকর্তা ওয়ালিউর রহমান বলেন, মিষ্টি আলু কোন্দাল ফসল, বৈরি আবহাওয়া ক্ষেতের তেমন ক্ষতি করতে পারে না। তাছাড়া অল্পদিনের ফসল উৎপাদন খরচও কম লাভও বেশি একারণে কৃষক আলু চাষে আগ্রহী হচ্ছে।
এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আসাদুজ্জামান জানান, কচুয়া ইউনিয়নের মাটি ও আবহাওয়া মিষ্টি আলু চাষের জন্য অত্যন্ত উপযোগী। কৃষকদের উন্নতজাতের বীজ, সঠিক সার ব্যবস্থাপনা ও আধুনিক চাষাবাদ পদ্ধতি সম্পর্কে নিয়মিত পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। মিষ্টি আলু চাষ গ্রামীণ অর্থনীতিকে শক্তিশালী করছে।
মন্তব্য করুন







