ইউপি চেয়ারম্যান সেন্টু হত্যা মামলায় শুটার লালন গ্রেপ্তার
_original_1760007019.jpg)
কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে আলোচিত ইউপি চেয়ারম্যান নইমুদ্দিন সেন্টু হত্যা মামলার আসামি লালন ওরফে শুটার লালনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
গতকাল বুধবার (৮ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাতে উপজেলার ফিলিপনগর ইউনিয়নের বৈরাগীরচর এলাকায় অভিযান চালিয়ে দৌলতপুর থানা পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে।
গ্রেপ্তার লালন দৌলতপুর উপজেলার ফিলিপনগর ইউনিয়নের পূর্ব ফিলিপনগর গ্রামের রঞ্জু মালিথার ছেলে। তিনি টুকু ও গিট্টু সোহাগ নামক সন্ত্রাসী গ্যাংয়ের শুটার হিসেবে পরিচিত। চরাঞ্চলের আলোচিত শীর্ষ সন্ত্রাসী গ্রুপের সক্রিয় সদস্য। লালনের নামে হত্যা মামলাসহ একাধিক মামলা রয়েছে। এছাড়াও লালন চাঁদাবাজি, দখলবাজি, অস্ত্র-মাদক ব্যবসা, চোরাকারবারি, লুটপাট, চুরি, ছিনতাইসহ বিভিন্ন ধরনের সন্ত্রাসী অপকর্মের সাথে জড়িত।
জানা গেছে, ২০২৪ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর বেলা সাড়ে ১১টার দিকে কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে আধিপত্য বিস্তার ও পূর্ব শত্রুতার জেরে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে ইউপি চেয়ারম্যান নইমুদ্দিন সেন্টুকে এলোপাতাড়ি গুলি করে প্রতিপক্ষের টুকু বাহিনীর লোকজন। এতে সেন্টু চেয়ারম্যান ঘটনাস্থলেই মারা যান।
এ ঘটনায় ১ অক্টোবর নিহত চেয়ারম্যানের ছেলে আহসান হাবীব কনক বাদী হয়ে দৌলতপুর থানায় মামলা করেন। এ মামলায় মোট ১০ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। মামলায় আরও ৮-১০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে।
লালনের বিষয়ে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ফিলিপনগর ইউনিয়নের জনপ্রিয় সেন্টু চেয়ারম্যানকে ইউনিয়ন পরিষদের অফিসে নির্মম নৃশংসভাবে গুলি করে হত্যার ঘটনায় শুটার লালনের সরাসরি অংশগ্রহণ ছিল। এছাড়া ২০২৩ সালে দৌলতপুর উপজেলার চক দৌলতপুর গ্রামের মারুফ হত্যাকাণ্ডেও লালন জড়িত ছিল। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তদন্তে লালনের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অপরাধের গোপন তথ্য বেরিয়ে আসে। লালনকে গ্রেপ্তারের খবর ছড়িয়ে পড়লে স্থানীয়রা খুশি হন। তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন তারা।
আরও পড়ুনজানা গেছে, তীব্র গণ-আন্দোলনে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর কুষ্টিয়ার দৌলতপুরের ফিলিপনগর এলাকায় বেপরোয়া হয়ে ওঠে টুকু বাহিনী। তরিকুল ইসলাম টুকুর নেতৃত্বে ওই অঞ্চলে হাটঘাট দখল, লুটপাট, চাঁদাবাজি, মাদক ব্যবসা, অস্ত্র ব্যবসা, প্রতিপক্ষের লোকজনের ওপর হামলা, হুমকি-ধামকিসহ নানা অপরাধ শুরু হয়।
তাদের এসব সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে একের পর এক অভিযোগ আসে ফিলিপনগর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নইমুদ্দিন সেন্টুর কাছে। তাদের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের প্রতিবাদ ও সতর্ক করেছিলেন তিনি। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে আসামিরা পূর্ব পরিকল্পিতভাবে ইউপি চেয়ারম্যান সেন্টুকে গুলি করে হত্যা করেন।
এদিকে নিহত নইমুদ্দিন সেন্টু ফিলিপনগর বাজারপাড়ার মুতালিব সরকারের ছেলে। তিনি বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। এক সময় উপজেলা বিএনপির সহসভাপতিও ছিলেন। দুইবার ইউপি চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন তিনি। এলাকার সার্বিক উন্নয়নে তার অবদান রয়েছে। এছাড়াও অসহায় ও বিপদগ্রস্ত মানুষদের সহযোগিতা করতেন তিনি।
এ বিষয়ে দৌলতপুর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সোলাইমান শেখ বলেন, ইউপি চেয়ারম্যান সেন্টুকে হত্যা মামলার আসামি লালনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বুধবার দিবাগত রাতে বৈরাগীরচর এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
মন্তব্য করুন