ঘোড়াঘাটে অনলাইনে বেগুনের বীজ কিনে প্রতারণার শিকার চার কৃষক

ঘোড়াঘাট (দিনাজপুর) প্রতিনিধি : আধুনিক প্রযুক্তির ছোঁয়ায় কৃষিক্ষেত্রে ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মের ব্যবহার দিন দিন বাড়লেও, এর অপব্যবহারে ক্ষতির মুখে পড়ছেন অনেক কৃষক। হচ্ছেন প্রতারিত। এমনই এক ঘটনার শিকার হয়েছেন দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট উপজেলার চার কৃষক।
সরেজমিনে দেখা গেছে, উপজেলার বুলাকিপুর ইউনিয়নের লোহারবন্দ গ্রামের চারজন কৃষক ভালো ফলন ও লাভের আশায় অনলাইনে বেগুনের বীজ ক্রয় করেন। কিন্তু রোপণের চার মাস পার হলেও এখন পর্যন্ত গাছে ফুল বা ফল ধরেনি।
লোহারবন্দ গ্রামের কৃষক রবিউল ইসলাম জানান, বর্গাচাষি হিসেবে প্রতি বছর দেশি জাতের বেগুন চাষ করেন। গত বছর ভালো ফলনের ছবি ফেসবুকে পোস্ট করলে রাসেল নামের এক ব্যক্তি তার সাথে যোগাযোগ করেন। রাসেল তাকে ‘বারি-১২’ জাতের বেগুনের বীজ দিয়ে বলেন, এটি লাভজনক ও অধিক ফলনশীল। তার পরামর্শে রবিউল দেড় বিঘা জমিতে বীজ রোপণ করেন। তার মাধ্যমে আরও তিন কৃষক একই বীজ ব্যবহার করেন। কিন্তু ৯০ দিন পার হলেও গাছে কোনো ফুল বা ফল আসেনি। যোগাযোগ করলে কোম্পানি জানায়, তিন মাস না হলে ফল আসবে না। অথচ এখন ১২০ দিন পার হলেও ফল দেখা যায়নি। ফোন দিলে তারা শুধু ওষুধ প্রয়োগের পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছেন, কিন্তু কোনো সাড়া দিচ্ছেন না। রবিউল বলেন, তাদের কথা শুনে সব ওষুধ প্রয়োগ করেছি। এখন নিঃস্ব হয়ে গেছি। যারা এই প্রতারণা করেছে, আমি তাদের বিচার চাই। তিনি আরও বলেন, তিনি ছাড়া আরও তিনজন তাজমল, ফজলুর ও বাবু এই বীজ কিনে ক্ষতির শিকার হয়েছেন।
আরও পড়ুনবিষয়টি নিয়ে মুঠোফোনে বীজ বিক্রয়কারী রাসেল বলেন, এটি মূলত শীতকালীন বেগুনের বীজ। শীতকালে ফল ধরবে। কিন্তু তাদের বারবার বলা সত্ত্বেও আগাম চাষ করার কারণে এই সমস্যা দেখা দিয়েছে। এছাড়াও গাছে ছত্রাক ছিলো।
এটা আসলে তেমন কোনও সমস্যা নয়। তারা যদি শীতকাল পর্যন্ত গাছ যত্ন করে রাখতে পারে তবে অবশ্যই ফলন হবে। তিনি আরও বলেন, আমি স্বদেশ ফিড নামের কোম্পানির বীজ দিয়েছি, যা অনেক ভালো মানের। এই কোম্পানির বিজের কোনো খারাপ ফলাফল নেই।
এ বিষয়ে ঘোড়াঘাট উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ রফিকুজ্জামান বলেন, নতুন কোনো ফসল বা চারা অনলাইন থেকে কেনার আগে অবশ্যই আমাদের পরামর্শ নিতে হবে। যাচাই না করে কিছুই লাগানো ঠিক নয়। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের প্রণোদনা দেওয়ার বিষয়টি বিবেচনা করা হবে এবং ওই প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার বিষয়টিও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
মন্তব্য করুন