মিয়ানমারে নির্বাচন : ভয় থেকে ভোট দিচ্ছেন মানুষ
আন্তর্জাতিক ডেস্ক : দেশজুড়ে চলছে গৃহযুদ্ধ, প্রধান রাজনৈতিক দলগুলো ভেঙে দেওয়া হয়েছে, নেতারাও জেলে। এ অবস্থায় দেশের অর্ধেকেরও বেশি মানুষ ভোট দিতে পারবেন না বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতেই মিয়ানমারে তিন ধাপের নির্বাচনের গতকাল রোববার প্রথম দফার ভোট গ্রহণ শেষ হয়েছে। ব্যাপক নিয়ন্ত্রিত এই নির্বাচনের ফলও অনেকটা পূর্বনির্ধারিত। ২০২১ সালে ক্ষমতা দখল করা সামরিক জান্তা ক্ষমতায় থাকবে, তা প্রায় নিশ্চিত।
নিউইয়র্ক টাইমসের একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তিন ধাপে ভোট হবে কেবল সেনা নিয়ন্ত্রিত এলাকায়। চূড়ান্ত ফল ২৫ জানুয়ারির পর আসবে। এরই মধ্যে জান্তা ৪০টি রাজনৈতিক দল ভেঙে দিয়েছে, যার মধ্যে নোবেলজয়ী অং সান সু চির এনএলডিও আছে। সমালোচনা নিষিদ্ধ করা নতুন একটি আইনে জুলাই থেকে শতাধিক মানুষকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তবুও কেউ কেউ পরিবর্তনের সামান্য সুযোগ দেখছেন। কায়িন পিপলস পার্টির চেয়ারম্যান নান্ট খিন আয়ে ও বলেন, ‘কিছু তো করতে হবে। এভাবে তো হাত গুটিয়ে বসে থাকা যায় না।’ তার দলটি ছিল হাতেগোনা কয়েকটির একটি, যাদের প্রার্থী দিতে বাধা দেওয়া হয়নি। কিন্তু ইয়াঙ্গুন ও মান্দালয়সহ বড় শহরগুলোয় ভোটকেন্দ্রে উপস্থিতি ছিল খুবই কম।
১৯৪৮ সালে স্বাধীনতার পর থেকে মিয়ানমার বেশিরভাগ সময় সেনা শাসনের অধীনে। ২০১০ সালের পর এক দশক গণতন্ত্রের পথে অগ্রগতি দেখা গেলেও ২০২১ সালে সেনাবাহিনী আগের বছরের নির্বাচনের ফল মানতে অস্বীকার করে ক্ষমতা দখল করে। এরপর থেকে দেশ পরিচালনায় জেনারেলদের মধ্যে চরম ব্যর্থতার অভিযোগ রয়েছে। এই নির্বাচন আংশিকভাবে প্রতিবেশী চীনকে সন্তুষ্ট করার চেষ্টা। চার বছরের গৃহযুদ্ধ থেকে বেরোতে জান্তাকে নির্বাচন আয়োজনের চাপ দিয়েছে বেইজিং। মিয়ামনারের সেনাবাহিনী বর্তমানে দেশের অর্ধেকেরও কম এলাকা নিয়ন্ত্রণ করে। তারা এই নির্বাচনের মাধ্যমে বৈধতার ভাবমূর্তি তৈরি করে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পেতে চায়।
আরও পড়ুনপশ্চিমা অনেক দেশ এই নির্বাচন নিন্দা করেছে। তবে ট্রাম্প প্রশাসন একে ‘অগ্রগতি’ বলেছে। দেশটির অর্থনীতি ২০২০ থেকে ৯ শতাংশ সংকুচিত হয়েছে, মূল্যস্ফীতি ৩৪ শতাংশে পৌঁছেছে। ডিম, রান্নার তেলসহ নিত্যপণ্য সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে। ৩৫ লাখের বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত, বড় শহরগুলোয় দৈনিক মাত্র আট ঘণ্টা বিদ্যুৎ মিলছে।
মন্তব্য করুন

আন্তর্জাতিক ডেস্ক







