সোনামসজিদ সীমান্তে পুশইনের শিকার ভারতীয় নারীকে বিএসএফ’র কাছে হস্তান্তর
চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি: চাঁপাইনবাবগঞ্জের সোনামসজিদ ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট (আইসিপি) দিয়ে পুশইনের শিকার বহুল আলোচিত ৩৫ সপ্তাহের (৯ মাস) অন্ত:সত্ত্বা সোনালী বেগম(২৬) ও তার ৮ বছর বয়সী ছেলে মো. সাব্বিরকে বিএসএফ’র কাছে হস্তান্তর করেছে বিজিবি। গত শুক্রবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় আইসিপিতে আনুষ্ঠানিক পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে তাদের হস্তান্তর করা হয়।
এসময় চাঁপাইনবাবগঞ্জের মহানন্দা ব্যাটালিয়নের (৫৯বিজিবি) অধিনায়ক লে. কর্নেল গোলাম কিবরিয়া উপস্থিত ছিলেন। ভারতীয় হাইকমিশনের অনুরোধের প্রেক্ষিতে স্বরাষ্ট্র মান্ত্রণালয়ের নির্দেশনায় এ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়।
বিজিবি, পুলিশ ও অনান্য সূত্রে জানা যায়, গত ২৬ জুন কুড়িগ্রাম সীমান্ত দিয়ে সোনালী, তার স্বামী মো. দানেশ(২৮), তাদের সন্তান সাব্বিরসহ ৬ ভারতীয়কে বিএসএফ জোরপূর্বক বাংলাদেশে পুশইন করে। এরপর তারা চাঁপাইনবাবগঞ্জে প্রবেশ করলে গত ২০ আগস্ট পুলিশ তাদের অবৈধ অনুপ্রবেশের দায়ে গ্রেফতার করে। পরে তাদের বিরুদ্ধে ২১ আগস্ট মামলা দিয়ে আদালতে পাঠালে আদালত তাদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। সোনালীদের বাড়ি ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের বীরভূম জেলার পাইকড় গ্রামে।
এমতাবস্থায় গত ১ ডিসেম্বর চাঁপাইনবাবগঞ্জ শহরের নয়াগোলা গাইনপাড়া মহল্লার মৃত রহমত আলীর ছেলে ফারুক হোসেন চাঁপাইনবাবগঞ্জের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. আশরাফুল ইসলামের আদালতে ওই ৬ জনের জামিন আবেদন করলে সোনালীর অন্ত:সত্ত্বার বিষয়টি বিবেচনা করে আদালত ৬ জনকে ফারুকের জিম্মায় জামিন দেন। ফারুকের পূর্ব-পুরুষের বাড়ি ভারতে সোনালীদের বাড়ির এলাকায়। তারা পরস্পর বংশীয় আত্মীয়।
আরও পড়ুনবিজিবি আরও জানায়, এদিকে অন্ত:সত্ত্বা নারী, শিশুকে পুশইনের ঘটনায় সৃষ্ট মানবিক ঝুঁকি ও আন্তর্জাতিক মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়টি নজরে রেখে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও বিজিবি সদর দপ্তর কুটনৈতিক পর্যায়ে ভারতের সাথে নিবিড় যোগাযোগ স্থাপন করে। পরে উভয় দেশের সম্মতিতে ভারতীয় নাগরিকদের নিজ দেশে পাঠানোর সিদ্ধান্ত হয়। এরই ধরাবাহিকতায় গত শুক্রবার সোনালী ও তার সন্তানকে নিজ দেশে ফেরত পাঠানো হয়।
৫৯-বিজিবি অধিনায়ক কিবরিয়া বলেন, বিএসএফ’র এমন অমানবিক পুশইন আন্তর্জাতিক মানবাধিকার মানদন্ড ও দ্বিপাক্ষিক সীমান্ত ব্যবস্থাপনা চুক্তির সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। এর বিপরীতে বাংলাদেশ সরকার, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও বিজিবি মানবিক মূল্যবোধ, আন্তর্জাতিক আইন ও প্রতিবেশীসূলভ সম্পর্কের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা প্রদর্শন করে পুরো প্রক্রিয়াটি সম্পূর্ণ স্বচ্ছ, নিরাপদ ও মর্যাদাপূর্ণভাবে সম্পন্ন করেছে।
মন্তব্য করুন





_medium_1765022875.jpg)

