জয়পুরহাটের ইউনিয়ন কৃষিসেবা কেন্দ্রগুলো যেন ভুতের বাড়ি
জয়পুরহাট প্রতিনিধি: জয়পুরহাটে অযত্ন আর অবহেলায় জরাজীর্ণ অবস্থায় পড়ে আছে কৃষকদের সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান ইউনিয়ন কৃষি সেবা কেন্দ্রগুলো। বছরের পর বছর সংস্কারের অভাবে জনশুন্য পরিত্যক্ত ভবনগুলো পরিণত হয়েছে ভুতুরে বাড়িতে।
কোনোটা ময়লার ভাগাড় ও রাত বিরাতে চলে মাদক সেবীদের আনাগোনা। এক সময়ের গুরুত্বপূর্ণ এসব প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে যাওয়ায় কৃষি সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন প্রান্তিক কৃষকরা। অন্যদিকে নষ্ট হচ্ছে সরকারের কোটি কোটি টাকার সম্পদ। দ্রুত কেন্দ্রগুলো সংস্কার করে আবারও কৃষি সেবা চালুর দাবি কৃষক ও স্থানীয়দের।
জানা গেছে, ৮০ দশকে প্রান্তিক কৃষকদের দোড়গাড়ায় কৃষি সেবা পৌছে দেওয়ার লক্ষে জয়পুরহাটের ৩২টি ইউনিয়নে নির্মাণ করা হয় ‘ইউনিয়ন কৃষি সম্প্রসারণ কেন্দ্র’ ও ‘কৃষি তথ্য সেবা ও পরার্মশ প্রদান কেন্দ্র’। কেন্দ্রগুলোতে প্রথমদিকে বীজ, সার ও কৃষি পণ্য সংরক্ষণ করা হতো। এছাড়া কেন্দ্রে গেলে কৃষি বিভাগের কাছ থেকে কৃষিপণ্য উৎপাদনে নানা পরামর্শ পেতেন কৃষকরা।
পরে কিছু কিছু কেন্দ্রে উপ সহকারী কৃষি কর্মকতারা কৃষকদের পরামর্শ দিতেন। কিন্তু ভবনগুলো দীর্ঘদিন থেকে সংস্কার না হওয়ায় পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছে। কোন ভবনের দেয়াল ও ছাদের পলেস্তেরা খুলে গেছে। কোনটার ভেঙে গেছে জানালা দরজা। ভরে গেছে আগাছা-লতাপাতায়। কোন কেন্দ্রের সামনে করা হয়েছে ময়লার ভাগাড়।
জেলার ৩২ টি ইউনিয়নের ৩ থেকে ৪টি বাদে সবগুলো কেন্দ্রের একই অবস্থা। কৃষক ও স্থানীয়দের অভিযোগ, ভবনগুলো পরিত্যক্ত অবস্থায় থাকায় এখানে চলে মাদকসেবীদের আনাগোনা। সরকার কোটি কোটি টাকা খরচ করে এসব কেন্দ্র নির্মাণ করলেও সংস্কারের অভাবে কৃষকরা সেবা পাচ্ছেননা। তাই দ্রুত সংস্কার করে পূর্বের মত প্রান্তিক কৃষকদের কৃষি সেবা নিশ্চিত করার দাবি তাদের।
আরও পড়ুনসদর উপজেলার পূরানাপৈল গ্রামের কৃষক শাহাদৎ হোসেন বলেন, ‘পূরানাপৈল ইউনিয়ন কৃষি অফিসে আগে কৃষি অফিসার বসতো। এখানে এলে যে কোন পরামর্শ পেতাম। বেশ কিছু বছর থেকে দেখছি এই অফিস বন্ধ। কৃষি কর্মকর্তারা এখন কোথায় থাকে খুঁজে পাওয়া যায়না। এই অফিসে কেউ না আসার জন্য বাজারের যত ময়লা আবর্জনা সব অফিসের সামনেসহ চারপাশে ফেলা হচ্ছে।
এখন অফিসটি ময়লার ভাগাড় হয়ে গেছে। এ বিষয়ে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক এ.কে.এম সাদিকুল ইসলাম বলেন, প্রথমদিকে এই অফিসগুলোতে বীজসহ কৃষি পণ্য সংরক্ষণ করা হতো। পরে কিছু অফিসে আমাদের অফিসাররা কৃষকদের কৃষি সেবা দিতেন।
পরে সংস্কারের অভাবে ভবনগুলো ব্যবহারের অনুপযোগি হওয়ায় ৫-৬ টি বাদ দিয়ে সবগুলো পরিত্যক্ত অবস্থায় রয়েছে। সংস্কারের জন্য উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের কাছে বরাদ্দ চাওয়া হয়েছে। যদি বরাদ্দ পাওয়া যায় তাহলে ভবনগুলো সংস্কার করা হবে।
মন্তব্য করুন







