ভিডিও মঙ্গলবার, ১৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ১ পৌষ ১৪৩২

প্রকাশ : ১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫, ০৯:৩৪ রাত

দেশি মাছের অভাব 

নওগাঁয় ভাটা পড়েছে শুঁটকি উৎপাদনে

নওগাঁয় ভাটা পড়েছে শুঁটকি উৎপাদনে

নওগাঁ প্রতিনিধি: নওগাঁর আত্রাই উপজেলার ভরতেঁতুলিয়া শুঁটকির গ্রাম হিসেবে বিশেষভাবে পরিচিত। এখানকার উৎপাদিত দেশীয় ছোটমাছের শুঁটকি প্রাকৃতিক উপায়ে তৈরি হওয়ায় কদর রয়েছে দেশজুড়ে। এছাড়া দেশের বাইরেও রয়েছে এখানকার শুঁটকির কদর। তবে ভরা মৌসুম হলেও মাছের অভাবে এখন ভাটা পড়েছে শুঁটকি উৎপাদনে। সামান্য যে মাছ পাওয়া যাচ্ছে, তাও কিনতে হচ্ছে বেশি দামে।

আত্রাই উপজেলা মৎস্য অফিস সূত্রে জানা যায়, চলতি মৌসুমে প্রায় ২৫০ মেট্রিক টন শুঁটকি উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। যার বাজারমূল্য প্রায় পাঁচ কোটি টাকা। এখানকার উৎপাদিত শুঁটকি রংপুর, নীলফামারী, লালমনিরহাট ও ঢাকার বাজারে বিক্রির পাশাপাশি রপ্তানি হয় ভারতেও।

সরেজমিনে দেখা যায়, আত্রাই রেল স্টেশনের দু’পাশ শুঁটকির মাছ শুকানোর চাতাল। নারী-পুরুষরা মাছ কাটা, ধোয়া, লবণ লাগিয়ে চাতালে শুকাতে দিচ্ছেন, কেউ কেউ এপিঠ-ওপিঠ উল্টে রাখছেন। মাছের অভাবে অনেক চাতাল ফাঁকাও পড়ে থাকতে দেখা যায়।

স্থানীয় শুঁটকি ব্যবসায়ীরা জানান, উপজেলার মধ্যদিয়ে বয়ে গেছে আত্রাই নদী। পাশাপাশি ছোট যমুনা নদী ও আরও রয়েছে শতাধিক খাল-বিল। এসব নদী ও খাল-বিলের পানি কমতে শুরু করলে বাজারে উঠতে শুরু করে দেশীয় প্রজাতির টেংরা, পুঁটি, খলসে, টাকি, শোল, চাঁদাসহ নানা জাতের মাছ। কিন্তু চায়না দুয়ারি, সুতি, কারেন্ট ও ভাদাই জালের অবাধ ব্যবহারে পানি কমলে এবছর দেখা নেই মাছের। মাছের অভাবে অক্টোবর-নভেম্বর মাসে বন্ধ ছিলো অধিকাংশ চাতাল।

আরও পড়ুন

এতে চাহিদা অনুযায়ী শুঁটকি উৎপাদন করতে পারছেন না। এছাড়াও শুঁটকি উৎপাদনের সঙ্গে জড়িত শ্রমিকেরা কর্মহীন হয়ে পড়ছে। শুঁটকি ব্যবসায়ী ভরতেঁতুলিয়া গ্রামের রামপদ শীল বলেন, এ বছরের মাছের খুব অভাব। বাজারে যেটুকু মাছ পাওয়া যাচ্ছে তাও বেশি দামে কিনতে হচ্ছে। মানভেদে প্রতি কেজি ১০০-২২০ কেজিতে মাছ কিনতে হচ্ছে। প্রতিদিন ২০-২৫ মণ মাছের চাহিদা রয়েছে। কিন্তু স্থানীয় বাজার ও মৎস্য আড়ৎ ঘুরে ৭-১০ মণের বেশি মাছ পাওয়া যাচ্ছে না। ফলে চাহিদা অনুযায়ী শুঁটকি উৎপাদন করতে পারছি না।

ব্যবসায়ী জিল্লুর রহমান ও সবদুল প্রামাণিক বলেন, উপজেলায় একসময় ৪০ জন ব্যবসায়ী শুঁটকি উৎপাদনে জড়িত থাকলেও বর্তমানে ১৫-১৮ জন ব্যবসায়ী শুঁটকি উৎপাদন কাজে জড়িত। এছাড়া মাছের অভাবে অনেক চাতাল বন্ধ আছে। এ অবস্থায় চাতালের কাজে জড়িত নারী-পুরুষ শ্রমিকও বেকার হয়ে পড়ছেন। নারী শ্রমিক আনজুমান বেগম বলেন, এই শুঁটকি মাছের চাতালে কাজ করে যে টাকা পাই, তা দিয়েই সংসার চলে। কাজ না পেয়ে অনেকে বসে থাকে।

আত্রাই উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা মাকসুদুর রহমান বলেন, শুঁটকির সাথে জড়িতদের নিরাপদ ও মানসম্মতভাবে শুঁটকি তৈরিতে প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। অসাধু উপায়ে মাছ শিকার বন্ধে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

নওগাঁয় ভাটা পড়েছে শুঁটকি উৎপাদনে

বাংলাদেশের ইতিহাস বিকৃত করা কোনো ছেলেখেলা নয়: আখতার হোসেন

কক্সবাজারে শুরু হলো তিন দিনব্যাপী ‘অ্যানুয়াল স্পোর্টস কম্পিটিশন অ্যান্ড বিচ কার্নিভ্যাল ২০২৫’

বর্তমান পরিস্থিতিতে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব না: শামীম হায়দার

ব্যক্তি স্বার্থকে বিসর্জন দিয়ে দেশের স্বার্থে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে : ডিসি, বগুড়া

সাতক্ষীরায় সড়ক দুর্ঘটনায় মা-ছেলে নিহত