‘আমরা নারী’ -এর যৌথ উদ্যোগে স্তন ক্যান্সার সচেতনতা সেমিনার অনুষ্ঠিত
অক্টোবর মাস বিশ্বব্যাপী “পিঙ্ক মান্থ” বা স্তন ক্যান্সার সচেতনতা মাস হিসেবে পালিত হয়। এই উপলক্ষে গতকাল শনিবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে এবং আমরা নারী ও এর সহযোগী প্রতিষ্ঠান ‘আমরা নারী রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট’-এর যৌথ উদ্যোগে স্তন ক্যান্সার সচেতনতা বিষয়ক সেমিনার ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান বক্তা ছিলেন, অধ্যাপক ডা. লায়লা শিরিন, বিভাগীয় প্রধান, সার্জিক্যাল অনকোলজি বিভাগ, জাতীয় ক্যান্সার গবেষণা ইন্সটিটিউট ও হাসপাতাল, মহাখালী, ঢাকা। এছাড়া উপস্থিত ছিলেন ডা. মো. খাদেমুল বাশার, সহকারী অধ্যাপক, সার্জিক্যাল অনকোলজি বিভাগ, একই প্রতিষ্ঠান।
সভায় সভাপতিত্ব করেন জাতীয় প্রেস ক্লাবের সভাপতি কবি হাসান হাফিজ। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন এ. কে. এম. মহসিন, আহ্বায়ক, স্বাস্থ্যসেবা উপকমিটি বখতিয়ার রানা, কোষাধ্যক্ষ, শাহনাজ পলি ও মাসুমুর রহমান খলিলী, কার্যনির্বাহী সদস্য। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন মোহাম্মদ মাহমুদুজ্জামান, সদস্য, স্বাস্থ্যসেবা উপকমিটি।
অধ্যাপক ডা. লায়লা শিরিন বলেন, স্তন ক্যান্সার প্রতিরোধের মূল চাবিকাঠি হলো সচেতনতা, নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা এবং নিজের প্রতি যত্নশীল থাকা। প্রতিটি নারী যদি নিজের শারীরিক সুস্থতা সম্পর্কে সচেতন হন, তাহলে উপকৃত হবে পুরো পরিবার ও সমাজ। ডা. মো. খাদেমুল বাশার বলেন,
ক্যান্সারমুক্ত সমাজ গড়তে শিক্ষার্থীদের মধ্যেই স্বাস্থ্য সচেতনতার বীজ বপন করতে হবে। শিক্ষাঙ্গন থেকেই সামাজিক আন্দোলনের সূচনা করা জরুরি। আমরা নারী”-এর প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান সমন্বয়কারী এম. এম. জাহিদুর রহমান (বিপ্লব) বলেন, আমরা নারী একটি অরাজনৈতিক ও অলাভজনক সংগঠন, যা নারীর ক্ষমতায়ন, স্বাস্থ্যসুরক্ষা, শিক্ষা ও সামাজিক উন্নয়নে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করছে। এর সহযোগী প্রতিষ্ঠান ‘আমরা নারী রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট’ নারীর অধিকার, নিরাপদ খাদ্য, স্বাস্থ্য ও সচেতনতা বিষয়ে গবেষণাভিত্তিক কার্যক্রম পরিচালনা করে। আমাদের লক্ষ্য প্রতিটি শিক্ষার্থীকে সচেতনতার দূত হিসেবে গড়ে তোলা।
আরও পড়ুনআমরা নারীর এক্সেকিউটিভ সদস্য,রোখসানা আক্তার রূপী বলেন, স্তন ক্যান্সার একটি প্রতিরোধযোগ্য বাস্তবতা বাংলাদেশে প্রতিবছর প্রায় ১৩০০০ নারী স্তন ক্যান্সারে আক্রান্ত হন, যার অর্ধেকের বেশি সময়মতো চিকিৎসা না পাওয়ায় মৃত্যুবরণ করেন। অথচ নিয়মিত আত্মপরীক্ষা, সচেতনতা ও প্রাথমিক চিকিৎসা গ্রহণের মাধ্যমে এই মৃত্যুহার উল্লেখযোগ্যভাবে কমানো সম্ভব।
বিশেষজ্ঞরা বলেন, স্তন ক্যান্সার তখনই সৃষ্টি হয়, যখন স্তনের কোষ অনিয়ন্ত্রিতভাবে বৃদ্ধি পেতে থাকে। প্রাথমিক পর্যায়ে নিয়মিত পরীক্ষা ও সচেতনতা বজায় রাখলে সহজেই শনাক্ত ও নিরাময় সম্ভব। ঝুঁকির কারণ ও প্রতিরোধ
বয়স, বংশগত ইতিহাস, হরমোনের ভারসাম্যহীনতা, অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস, ধূমপান, মানসিক চাপ ও শারীরিক নিষ্ক্রিয়তা স্তন ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়ায়। তবে সুষম খাদ্য, নিয়মিত ব্যায়াম এবং নিজের প্রতি যত্নশীলতা এই ঝুঁকি অনেকাংশে কমিয়ে দেয়।
গণমাধ্যমের ভূমিকা-স্তন ক্যান্সার প্রতিরোধে গণমাধ্যমের ভূমিকা অপরিসীম। টেলিভিশন, সংবাদপত্র, অনলাইন নিউজ পোর্টাল ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের মাধ্যমে আত্মপরীক্ষা, সচেতনতা ও ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি ছড়িয়ে দেওয়া সম্ভব। স্তন ক্যান্সার শুধু একটি স্বাস্থ্য সমস্যা নয়, এটি এক সামাজিক চ্যালেঞ্জ— যা সম্মিলিত সচেতনতা ও মানবিক উদ্যোগের মাধ্যমেই মোকাবিলা করা সম্ভব।
মন্তব্য করুন

নিউজ ডেস্ক








