ভিডিও শনিবার, ১১ অক্টোবর ২০২৫

ব্যান্ড সংগীত জৌলুস হারায়নি, বাণিজ্যিক চটুল গানগুলোকে বেশি উপস্থাপন করা হচ্ছে: তানযীর তুহিন

ব্যান্ড সংগীত জৌলুস হারায়নি, বাণিজ্যিক চটুল গানগুলোকে বেশি উপস্থাপন করা হচ্ছে: তানযীর তুহিন

সম্প্রতি প্রকাশ পেয়েছে আভাস ব্যান্ডের নতুন গান ‘সত্তা’। গানটির সূত্র ধরে আলাপ জমেছিল ব্যান্ডের গায়ক তানযীর তুহীনের সঙ্গে। জনপ্রিয় এ সংগীত শিল্পী বিভিন্ন বিষয়ে খুলেছিলেন মনের আগল। 

আভাসের নতুন গান ‘সত্তা’ এসেছে। কেমন সাড়া পাচ্ছেন? 

মোটামুটি ভালো সাড়া পাচ্ছি। ভাইরাল পর্যায়ের রেসপন্স আমরা কখনও আশা করি না। এ ধরনের গান ভাইরাল হওয়া কঠিন। সময়ের সঙ্গে শুনতে শুনতে ভালো লাগবে বলে আশা করছি।   

আভাসের সঙ্গে অভ্যস্ত হতে কতটা সময় লেগেছে? 

ছোটবেলার একটি ব্যান্ডের (শিরোনামহীন) সঙ্গে ইনোসেন্ট বয়স থেকে বেড়ে ওঠার যে সম্পর্ক তৈরি হয় সেটা একরকম। অন্যদিকে মধ্যবয়সে এসে পরিণত কয়েকজন মানুষ নিয়ে নতুন একটি ব্যান্ড করা, সেটার সঙ্গে অভ্যস্ত হতে অবশ্যই একটু সময় লাগবে। আলহামদুলিল্লাহ, আমাদের ব্যান্ডের সবাই চমৎকার প্রতিভার এবং সমমনা। গত সাত বছরে আমরা অনেকটা অভ্যস্ত হয়ে গেছি। 

প্রতিষ্ঠিত ব্যান্ড থেকে বেরিয়ে নতুন ব্যান্ড (আভাস) গড়ে তোলা অনিশ্চিত যাত্রা মনে হয়নি? 

সুনিশ্চিত-অনিশ্চিত বিষয়টা তখন নির্ভর করবে যখন আপনি একটা প্রত্যাশার ভেতর দিয়ে যাবেন। শিরোনামহীন জন্মের সময়ও আমার কোনো প্রত্যাশা ছিল না। ভালো কিছু গান করব যেগুলো শুনে মানুষ আনন্দ পাবে— এরকম প্রত্যাশা নিয়ে এগিয়েছি। কিন্তু চাপ কখনও ছিল না।  বাকিটা সৃষ্টিকর্তার দোয়া ও আশীর্বাদপুষ্ট হওয়ার একটা ব্যাপার ছিল। সেই জায়গা থেকে সাধারণ মানুষের ওপর ভরসা করে আমরা চেষ্টা করেছিলাম গান করার।

দীর্ঘ ক্যারিয়ারে প্রত্যাশা ও প্রাপ্তির হিসাব মেলাতে গিয়েছেন কখনও?

একটা পেশাদার জীবন পার করলে অবশ্যই সবাই প্রাপ্তি-প্রত্যাশা মেলানোর চেষ্টা করে। আমরাও মেলাই। আমাদের জায়গাটা দৈনন্দিন নিত্য অপরিহার্য জিনিসের মতো না। এটা মনের খোরাকের জিনিস। শ্রোতাদের শোনার চর্চা, তাদের পরিণত হয়ে ওঠা, সামাজিক মাধ্যমে সাংবাদিকরা কাদের ভাইরাল করছেন, কোন শিল্পকে এগিয়ে রাখছেন— সবকিছু মিলিয়ে একটা শিল্প। সেখানে প্রাপ্তি-প্রত্যাশার দিকেও খেয়াল রাখি। শ্রোতাদের পরিস্থিতি, দেশ কোন দিকে যাচ্ছে, কীরকম সংস্কৃতি এখন সবাই বেশি গ্রহণ করছে— আমরা দেখি। তবে আমরা নিজস্ব আদর্শ ও দর্শনে চলতে আগ্রহী।

আরও পড়ুন

আপনি স্থাপত্য বিদ্যায় পড়েছেন। আপনার গানে এর প্রভাব কতটা?

এটা শতভাগ প্রভাব ফেলে। কারণ আমি যে বিষয়ে পড়াশোনা করেছি সেটি মূলত মানুষের উন্নতির জন্য। যে দেশের স্থাপত্য যত উন্নত সে দেশ তত উন্নত হবে। তাদের জীবনধারা, আচরণ, ব্যক্তিত্ব সবকিছুই সেভাবে উন্নত হবে। প্রেম-ভালোবাসার গানের জন্য প্রচুর মানুষ আছে। তারা বিভিন্নভাবে প্রেম ভালোবাসার গান করবেন। আমরাও করি। তবে আমরা তার থেকে বেশি চাই সমাজ নিয়ে বলতে। আমাদের অসুবিধা, অপ্রাপ্তি, আটকে থাকাগুলো নিয়ে কথা বলতে আমরা একটু বেশি আগ্রহী। এখনকার এই সময়ের গল্পগুলো ৫০-১০০ বছর পর মানুষ শুনলে জানবে—  এই সময় বাংলাদেশের মানুষ কীভাবে থাকতেন বা আমাদের সুখ-দুঃখ কীসের মধ্যে নিহিত ছিল।  

অনেকে বলেন ব্যান্ড সংগীত জৌলুস হারিয়েছে। আপনারও কী তাই মনে হয়?

ব্যান্ড সংগীত জৌলুস হারায়নি। বাণিজ্যিক চটুল গানগুলোকে বেশি উপস্থাপন করা হচ্ছে। ব্যান্ডের সিনিয়রদের এবং শক্তিশালী ব্যান্ডগুলোর ক্রিয়েশন বা কনটেন্ট করোনার কালে এত কমে গিয়েছিল যে ওই সময় কিছু চটুল বা বাণিজ্যিক কাজ ফেসবুক-ইউটিউবে প্রচুর চলে আসে। অনেক সাংবাদিক সেইসব অপ্রয়োজনীয় সংস্কৃতিকে এত ব্যাপকভাবে প্রমোট করেছেন যা সারাদেশে ছড়িয়ে গেছে। তাছাড়া শিক্ষাগতভাবে আমরা একটু দুর্বল। আমাদের বড় অংশের শিক্ষার অভাব। ফলে তাদের রুচিবোধের সঙ্গে যায় এমন গানগুলো বেশি হওয়ায় শুদ্ধ সংস্কৃতি চাপা পড়ে গেছে। আমার বিশ্বাস আমরা শিগগিরই এখান থেকে বেরিয়ে আসব। নতুন জেনারেশনের ব্যান্ড আসছে। তারাও গান করবে। ভালো শিল্পীদের কথা এবং যে সংস্কৃতি অনেক দিন টিকবে সেসবের কথা প্রচারের দায়িত্ব সাংবাদিকদের পালন করতে হবে। 

দেশের সিনেমায় ব্যান্ডের গানের ব্যবহার একেবারেই কম। কারণ কী বলে মনে হয় আপনার? 

ব্যান্ডের গান ইমপ্লিমেন্ট করার মতো বাংলা সিনেমা কম হয়েছে। ব্যান্ডের গান এত দামি যে চাইলেই সস্তা জায়গায় গেঁথে দিতে পারবেন না। মান্না ভাইয়ের (চিত্রনায়ক মান্না) আম্মাজান সিনেমায় বাচ্চু ভাইয়ের গান আছে। তিনি হয়তো সিনেমার মতো করে বানিয়েছেন। কিন্তু এটাকে ব্যান্ডের বলা চলে না। ওনার সলো প্রজেক্ট হতে পারে। ব্যান্ডের গান কোন পাত্রে কোন স্থানে রাখবেন সেই জায়গার ডেসক্রিপশন লাগবে।

মা ছাড়া জীবন কেমন? 

মাকে ছাড়া জীবনটা শূন্য। জন্ম থেকে চলে যাওয়ার আগ পর্যন্ত পৃথিবীতে সবচেয়ে বিশ্বস্ত মানুষ হচ্ছে মা। ওই অ্যাকাউন্টটা ক্লোজ হয়ে গেলে অসহায় লাগে। এটা অভ্যাসের ব্যাপার। আমরা ভালোবাসায় অভ্যস্ত। মা আমাদের সবচেয়ে বড় আশ্রয়। মায়ের অভাব প্রতি মুহূর্ত প্রকট আকার ধারণ করে। এক গ্লাস পানি খেতে গেলেও মাকে মনে করি। কোথাও তাকালে মনে হয় এখানে মা হাঁটত, বসত। চুলে হাত দিলে মনে হয় মা হাতিয়ে দিচ্ছে বা আচড়ে দিচ্ছে।

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

ব্যান্ড সংগীত জৌলুস হারায়নি, বাণিজ্যিক চটুল গানগুলোকে বেশি উপস্থাপন করা হচ্ছে: তানযীর তুহিন

সিরাজগঞ্জে বাসচাপায় মোটরসাইকেল চালক নিহত

অর্থ দিয়ে গাজার ক্ষত সারাতে চায় ইসরায়েলের শীর্ষ অস্ত্রদাতা জার্মানি

ঝালকাঠিতে চেক জালিয়াতি মামলায় অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষিকা গ্রেফতার

ভোটের মাধ্যমে সুশাসন, সুবিচার ও ইসলামী মূল্যবোধের পক্ষে বিপ্লব করতে চাই : গোলাম পরওয়ার

সেফ এক্সিট নয়, আমরা স্বাভাবিক এক্সিট চাই : ধর্ম উপদেষ্টা