ভাঙনরোধে বালুর বস্তা ফেললেও স্বস্তি নেই নদীপাড়ের মানুষের
বগুড়ার ধুনটে যমুনা নদীতে কমছে পানি, বেড়েছে ভাঙন

ধুনট (বগুড়া) প্রতিনিধি : উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও ভারি বৃষ্টির কারণে কয়েকদিন ধরে ধুনটে যমুনা নদীতে অস্বাভাবিক গতিতে পানি বৃদ্ধির পরে এবার পানি কমতে শুরু করেছে। পানি বৃদ্ধির পর আবার কমতে শুরু করায় প্রবল স্রোতে নদীপাড়ে ভয়াবহ ভাঙন দেখা দিয়েছে।
ইতিমধ্যে শহড়াবাড়ি ঘাট এলাকার প্রায় ৫০০ মিটার অংশ নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। ঘাট এলাকার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও ভূমি ধসে পড়ছে যমুনায়। ভাঙন ধেয়ে আসছে বাঁধের দিকে। এতে শঙ্কায় পড়েছেন যমুনা পাড়ের মানুষ।
আজ শুক্রবার (১০ অক্টোবর) সকালে উপজেলার শহড়াবাড়ি ঘাট এলাকায় যমুনা নদীর পানির সমতল রেকর্ড করা হয়েছে ১৪ দশমিক ২০ মিটার। গত ২৪ ঘণ্টায় ৩ সেন্টিমিটার পানি কমে বিপৎসীমার ২১৪ সেন্টিমিটার মিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে (বিপৎসীমা ১৬.২৫ মিটার)।
সরেজমিন খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গত কয়েকদিনে যমুনার পানি বৃদ্ধি ও কমতে শুরু করায় চার দিন ধরে উপজেলার শহড়াবাড়ি ঘাট এলাকায় প্রবল স্রোত ও ঢেউয়ের আঘাতে ভাঙন দেখা দিয়েছে। ওই এলাকার অন্তত ৯টি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, বসতভিটা ও আবাদি জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। ভাঙন আতঙ্কে নদীপাড়ের মানুষ ভিটেমাটি নিয়ে ঝুঁকিতে রয়েছেন।
আরও পড়ুনভাঙন-আতঙ্কের ছাপ স্থানীয়দের চোখেমুখে। অনেকে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও ঘর-বাড়ি সরিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। অনেকে টাকা পয়সা ও জায়গার অভাবে অন্যত্র সরিয়ে নিতে পারছে না। আসবাবপত্র গুছিয়ে রেখেছে কয়েকটি পরিবার। ভাঙনের মাত্রা বেড়ে গেলে ঘর-বাড়ি ভেঙে অন্যত্র চলে যাওয়ার জন্য প্রস্তুত তারা। আবার কেউ কেউ তাদের সংসারের জিনিসপত্র নিকট আত্মীয়ের বাড়িতে নিয়ে রাখছেন।
হঠাৎ করে যমুনা নদীর এমন রুদ্রমূর্তীর কারণ হিসেবে স্থানীয়রা দুষলেন নদী থেকে অবৈধবাবে বালু উত্তোলনকে। এখান থেকে প্রতি বছর অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করা হয়। সেসময় কোনো ব্যক্তি প্রতিবাদ করতে পারত না, প্রতিবাদ করলে তাদের হুমকি দিত। এখন তার খেসারত দিচ্ছে এলাকাবাসি। ভাঙনে বহু মানুষ ক্ষতিগ্রস্থ হলেও থেমে নেই বালু উত্তোলন।
তবে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় গত বুধবার বিকেল থেকে বালু ভর্তি বস্তা ফেলে ভাঙন ঠেকানোর চেষ্টা করছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। কিন্ত এ কাজে স্বস্তি কিংবা আতংক কাটছে না নদীপাড়ের মানুষের। ভাঙন জনপদের মানুষ যমুনা নদীর ভাঙনরোধে স্থায়ী ব্যবস্থার দাবি করেন।
বগুড়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী নাজমুল হক বলেন, ভাঙনের খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে ঝঁকিপূর্ণ এলাকায় আপাতত বালুর বস্তা ফেলে রক্ষার চেষ্টা করছি। তবে ভাঙন রোধে স্থায়ী ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে।
মন্তব্য করুন