ভিডিও শনিবার, ১১ অক্টোবর ২০২৫

পুরোনো চাকা ঘুরছে নতুন আশায়, ঠাকুরগাঁওয়ে পুনর্জীবন পেল মৃৎশিল্প

পুরোনো চাকা ঘুরছে নতুন আশায়, ঠাকুরগাঁওয়ে পুনর্জীবন পেল মৃৎশিল্প

ঠাকুরগাঁও জেলা প্রতিনিধি: ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার আকচা ইউনিয়নের পালপাড়া গ্রাম। চারপাশে মাটির ঘ্রাণ আর চাকার ঘুরন্ত শব্দ, এই শব্দেই দিনের শুরু আর শেষ হয় এখানকার মানুষদের। প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে তারা গড়ে তুলেছেন মাটির নানা পাত্র, ফুলদানি, খেলনা আর শিল্পকর্ম। কিন্তু সময়ের সাথে তাল মিলিয়ে সেই ঐতিহ্যবাহী মৃৎশিল্প এখন যেন হারিয়ে যাচ্ছিল।

এই বাস্তবতা বদলাতে এক নতুন উদ্যোগ নিয়েছে জেলা প্রশাসন। মৃৎ শিল্পীদের দক্ষতা উন্নয়ন, মান উন্নয়ন ও বাজারজাতকরণ বিষয়ক প্রশিক্ষণ কর্মশালা, এই শিরোনামের প্রকল্পে পাল সম্প্রদায়ের শিল্পীদের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে আধুনিক কৌশল, বিপণনের ধারণা আর নতুন প্রেরণা।

গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে এই কর্মশালার অগ্রগতি দেখতে পালপাড়া গ্রাম পরিদর্শন করেন, ঠাকুরগাঁওয়ের জেলা প্রশাসক ইশরাত ফারজানা। তার সাথে ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) মেহনাজ ফেরদৌস। জেলা প্রশাসক বলেন, পালপাড়ার প্রায় দুই শতাধিক পরিবার দীর্ঘদিন ধরে মৃৎশিল্পের সাথে জড়িত। কিন্তু বাজারের পরিবর্তনের সাথে সাথে তাদের পণ্য বিক্রি কমে গেছে। এখন সময় এসেছে তাদের শিল্পকে আধুনিক রূপে ফিরিয়ে আনার।

জেলা পরিষদের অর্থায়নে ২০ জন শিল্পী নিয়ে শুরু হওয়া ১০ দিনের এই প্রশিক্ষণ শেষে তারা আরও ২০০ জনকে প্রশিক্ষণ দেবেন। প্রশিক্ষণটি চারটি ধাপে পরিচালিত হচ্ছে। প্রথমে মৌলিক ধারণা, এরপর দক্ষতা বৃদ্ধি, উন্নত উৎপাদন, আর সর্বশেষ ধাপে বাজারজাতকরণ।

আরও পড়ুন

এই কর্মশালার নেতৃত্বে রয়েছেন আড়ংয়ের সিনিয়র কনসালট্যান্ট চন্দ্র শেখর সাহা, যিনি উদ্বোধনের দিন থেকেই ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে প্রশিক্ষণ কার্যক্রম তদারকি করছেন। সহকারী প্রশিক্ষক হিসেবে আছেন আশরাফুল শাওন এবং সমন্বয়কের দায়িত্বে মোছা. শরিফা খাতুন। প্রশিক্ষণার্থী রাধারানী পাল, দ্বিজেন পাল, পঞ্চমী পাল, বৃষ্টি উর্মিলা, রত্না ও অতুল পাল সবার চোখেই এখন একটাই স্বপ্ন -‘আমাদের পণ্য শুধু ঠাকুরগাঁও নয়, ঢাকায়, এমনকি দেশের বাইরেও বিক্রি হোক।’

সরকারি প্রতিষ্ঠান বিসিক, টিটিসি, এবং বেসরকারি প্রতিষ্ঠান আড়ং ও অন্যান্য সংস্থার সহযোগিতায় এই পণ্যগুলো ভোক্তাদের কাছে পৌঁছে দেওয়ার কাজও চলছে। দ্বিজেন পাল হাসিমুখে বললেন, আগে ফুলদানি বানাতাম শুধু স্থানীয় হাটে বিক্রি করার জন্য। এখন শেখানো হচ্ছে কিভাবে এটাকে শো-পিসে রূপ দেওয়া যায়। এখন মনে হচ্ছে, আমাদের কাজও বড় দোকানে জায়গা পেতে পারে।

জেলা প্রশাসক ইশরাত ফারজানা বলেন, মৃৎশিল্প শুধু একটা পেশা নয়, এটা আমাদের সংস্কৃতির অংশ। এই ঐতিহ্য টিকিয়ে রাখতেই আমরা আন্তর্জাতিক মানের প্রশিক্ষক এনে এই প্রশিক্ষণের আয়োজন করেছি। এর মাধ্যমে পাল সম্প্রদায়ের জীবনে নতুন দিগন্ত খুলে যাবে বলে আমি বিশ্বাস করি।

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

‘ভিডিও বানানোর নামে হাত ধরছে, এটা কি ব্যবসা?’ | Agargaon Cake | Daily Karatoa

কিছু উপদেষ্টার থেকে প্রধান উপদেষ্টাকে সতর্ক থাকতে বললেন মিয়া গোলাম পরওয়ার | PR | Daily Karatoa

বাংলাদেশিদের সমাবেশে নিউ ইয়র্ক সিটি মেয়র প্রার্থী মামদানি

বাংলাদেশ-বাহরাইন বৈঠক: শ্রমবাজার খুলে দেওয়ার আহ্বান

লিসবনে প্রবাসীদের উৎসব, দূর দেশে আপনজন

কেক পট্টিখ্যাত আগারগাঁওয়ে চলছে পুলিশের অভিযান । cake | Daily Karatoa