ভিডিও বুধবার, ১২ মার্চ ২০২৫

পাকিস্তানে ট্রেন হামলার ঘটনায় শতাধিক জিম্মি উদ্ধার, ১৬ সন্ত্রাসী নিহত 

পাকিস্তানে ট্রেন হামলার ঘটনায় শতাধিক জিম্মি উদ্ধার, ১৬ সন্ত্রাসী নিহত,

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: পাকিস্তানের বেলুচিস্তানের দুর্গম এলাকায় কোয়েটা থেকে পেশোয়ারগামী যাত্রীবাহী ট্রেন জাফর এক্সপ্রেসে সন্ত্রাসী হামলার পর গতকাল মঙ্গলবার (১১ মার্চ) জাফর এক্সপ্রেসের ৪০০ জনের বেশি যাত্রীকে জিম্মির ঘটনা ঘটেছে। যাত্রীদের মধ্যে উল্লেখযোগ্যসংখ্যক নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যও রয়েছেন।নিরাপত্তা বাহিনীর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, বোলান পাসের ধাদর এলাকায় একটি বৃহৎ উদ্ধার অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে অন্তত ১৬ জন হামলাকারীকে হত্যা করা হয়েছে।

সরকারি সূত্রে জানা গেছে, ট্রেনের চালকসহ কমপক্ষে ১০ জন নিহত হয়েছেন। নিরাপত্তা বাহিনী ১০০ জনের বেশি যাত্রীকে উদ্ধার করতে সক্ষম হয়েছে, যার মধ্যে নারী ও শিশু রয়েছেন। তবে এই উদ্ধার সামরিক অভিযানের মাধ্যমে হয়েছে, নাকি হামলাকারীদের পক্ষ থেকে কিছু যাত্রী মুক্তি দেওয়া হয়েছে, তা স্পষ্ট নয়।মুশকাফ টানেল এলাকায় নিখোঁজ যাত্রীদের উদ্ধার এবং হামলাকারীদের আইনের আওতায় আনতে অভিযান চলছে।

এটি পাকিস্তানের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো কোনো যাত্রীবাহী ট্রেন ছিনতাইয়ের ঘটনা। নিষিদ্ধঘোষিত বেলুচ লিবারেশন আর্মি (বিএলএ) হামলার দায় স্বীকার করেছে। সশস্ত্র সংগঠনটি জানিয়েছে, তারা বিপুলসংখ্যক যাত্রীকে জিম্মি করেছে।

রেলওয়ে সূত্র জানায়, সকাল ৯টায় কোয়েটা থেকে পেশোয়ারের উদ্দেশে ৪৫০ জন যাত্রী নিয়ে জাফর এক্সপ্রেস রওনা দেয়।দুপুর ১টার দিকে পানির ও পেশি রেলস্টেশনের মধ্যবর্তী এলাকায় ট্রেনটি হামলার শিকার হয়। মুশকাফ টানেলের কাছে সন্ত্রাসীরা ট্রেনে রকেট ও স্বয়ংক্রিয় অস্ত্র দিয়ে হামলা চালায়, যার ফলে ট্রেনটি থেমে যায় এবং চালক গুরুতর আহত হন। সন্ত্রাসীরা যাত্রীদের পরিচয় যাচাই করে কিছু মানুষকে জিম্মি করে পাহাড়ি এলাকায় নিয়ে যায়।

আরও পড়ুন

সূত্র জানায়, সন্ত্রাসীরা স্বয়ংক্রিয় অস্ত্র ও রকেট লঞ্চার নিয়ে পাহাড়ি এলাকায় অবস্থান নেয় এবং রেললাইনে বিস্ফোরণ ঘটায়।উদ্ধারকৃত ১০৪ জন যাত্রীকে পানির রেলস্টেশনে নেওয়া হয়েছে। এদের মধ্যে ৩১ জন নারী, ১৫ জন শিশু ও ৫৮ জন পুরুষ রয়েছেন। তাদের জন্য ত্রাণ ট্রেনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। আহতদের কাছের হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে। ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত নিরাপত্তা বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে।বেলুচিস্তান সরকার জরুরি অবস্থা জারি করেছে এবং সিবি হাসপাতাল প্রস্তুত রাখা হয়েছে।

পাকিস্তানের রাষ্ট্রপতি আসিফ আলী জারদারি সন্ত্রাসী হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর ভূমিকার প্রশংসা করেন।প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরীফ বলেন, সন্ত্রাসীদের নির্মূল না করা পর্যন্ত যুদ্ধ চলবে। তিনি বলেন, ‘বেলুচিস্তানের উন্নয়নবিরোধী সন্ত্রাসীরা পবিত্র রমজান মাসে নিরীহ যাত্রীদের টার্গেট করেছে, যা তাদের অমানবিক মানসিকতার প্রমাণ।’নিরাপত্তা বাহিনী সতর্কতার সঙ্গে অভিযান চালাচ্ছে, কারণ সন্ত্রাসীরা যাত্রীদের মানবঢাল হিসেবে ব্যবহার করছে।

সেনাবাহিনী জানিয়েছে, সন্ত্রাসীরা ছোট ছোট দলে বিভক্ত হয়ে হামলা চালাচ্ছে এবং তাদের প্রতিহত করতে বিভিন্ন এলাকা ঘিরে ফেলা হয়েছে।এই পরিস্থিতির পূর্ণ সমাধান না হওয়া পর্যন্ত বিস্তারিত সামরিক কৌশল প্রকাশ করা হচ্ছে না। তবে নিরাপত্তা বাহিনী দৃঢ়প্রতিজ্ঞ যে, সন্ত্রাসীদের নির্মূল করা হবে এবং সব যাত্রীকে নিরাপদে ফিরিয়ে আনা হবে।

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

ছাত্র ফেডারেশন-ছাত্র ইউনিয়ন নেতাকর্মীদের নামে মামলা

বাসর রাতে নববধূর ফোনে প্রাক্তনের মেসেজ, ঘটনা গড়ালো আদালতে!

মাদারীপুরে মসজিদে ঢুকে খুন,২ জনকে আটক করেছে র‌্যাব 

বিমানবন্দরে ওমরার মোয়াল্লেমের পকেট থেকে স্বর্ণালংকার জব্দ

শুক্রবার এক লাখ রোহিঙ্গার সাথে ইফতারে করবেন ইউনূস ও গুতেরেস

কিশোরী ধর্ষণ মামলা তুলে না নেওয়ায় বাবাকে হত্যার অভিযোগ