ভিডিও বুধবার, ১২ মার্চ ২০২৫

বিপাকে নিম্নআয়ের মানুষ

মোহাম্মদ আলী হাসপাতালের টিকাদান কেন্দ্রে জলাতঙ্কের ভ্যাকসিনের সরবরাহ বন্ধ

মোহাম্মদ আলী হাসপাতালের টিকাদান কেন্দ্রে জলাতঙ্কের ভ্যাকসিনের সরবরাহ বন্ধ

স্টাফ রিপোর্টার : কুকুর-বিড়াল, শিয়ালের কামড়ে আক্রান্তরা জলাতঙ্কের ভ্যাকসিনের জন্য ভিড় করেন বগুড়া মোহাম্মদ আলী হাসপাতালের ইপিআই কেন্দ্রে। কিন্তু গত শনিবার থেকে সরকারিভাবে ভ্যাকসিনের সরবরাহ না থাকায় দুর্ভোগে পড়ছেন ভুক্তভোগীরা। অনেক দূর দূরান্ত থেকে আক্রান্ত ব্যক্তিরা আসছেন এসে টিকা না পেয়ে চলে যাচ্ছেন, আবার অনেকে চারজনের প্রুপ হয়ে একটি করে ভায়াল কিনে টিকা নিয়ে বাড়ি ফিরছেন।

বগুড়া মোহাম্মদ আলী হাসপাতাল সূত্র করতোয়া’কে জানা যায়, বগুড়াসহ আশেপাশের জেলা  জয়পুরহাট, নওগাঁ, গাইবান্ধা ও সিরাজগঞ্জ জেলা থেকে প্রায় প্রতিদিন গড়ে ২শ’ থেকে ২৫০ জন নতুন এবং পুরাতন রোগী এন্টি র‌্যাবিস ভ্যাকসিন নিতে আসেন। এর মধ্যে বেশিরভাগই বিড়ালের আঁচড় ও কামড়ানো রোগী। দ্বিতীয় অবস্থানে আছে কুকুরে কামড়ানো রোগীর সংখ্যা।

এরমধ্যে নতুন রোগী আসেন ৬০ থেকে ৭০জন। ভ্যাকসিনের একটি ভ্যায়েল ৪ জন রোগীকে ভাগ করে দেয়া হয়। এভাবে মোট ৩ ডোজ ভ্যাকসিন দেয়া হয়। এই টিকা সেন্টারে প্রতিদিন সকাল ৮টা থেকে বেলা ১ টা পর্যন্ত চিকিৎসাসেবা ও টিকা কার্যক্রম চালানো হয়। ভ্যাকসিনেশন সেন্টারে  চিকিৎসার  পাশাপাশি বিনামূল্যে  জলাতঙ্ক প্রতিরোধী টিকা ইনজেকশন অ্যান্টি র‌্যাবিস ভ্যাকসিন (এআরভি) ও কামড়ের ধরণ অনুযায়ী  ইনজেকশন র‌্যাবিস ইমুনোগ্লোবুলিন (আরআইজি) প্রদান করা হয়। সূত্র আরও জানান কুকুরের কামড়ে আক্রান্তদের সাথে সাথে অন্যান্য প্রাণিতে কামড়ানো রোগীর সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে।

কিন্তু মাঝে মাঝে সরকারের সরবরাহ স্বল্পতার জন্য ভূক্তভোগীদের সরকারীভাবে ভ্যাকসিন দেয়া সম্ভব হচ্ছে না। গত রোববার টিকাদান কেন্দ্রে বিড়ালের আঁচড়ের জন্য ৩য় ডোজের টিকা নিতে আসেন বগুড়া শহরের জামিলনগর এলাকার গৃহবধূ তানজিনা বেগম। এসেই দেখতে পান ৪ জন করে গ্রুপে গ্রুপে ভাগ হয়ে টিকা কিনে এনে আক্রান্তরা টিকা দিচ্ছেন। তিনিও একটি গ্রুপের সাথে মিলিত হয়ে ১৩০ টাকার টিকা এবং তার সাথে ১০ টাকার একটি সিরিঞ্জ কিনে এনে  টিকা দিয়ে বাড়ি ফেরেন।

বিড়ালের আচড়ের টিকা নিতে এসেছিলেন কলোনী এলাকার গৃহবধূ শিউলি এবং তার  কলেজ পড়ুয়া মেয়ে রুপা। তারাও এসে ঝামেলায় পড়েন। কোথায় এই টিকা কিনতে পাওয়া যায় তারা জানেন না। শেষে ঠিক হয় মা আজ টিকা দেবেন পড়ে মেয়ে দেবেন। এজন্য মা শিউলি একটা গ্রুপের সাথে টাকা শেয়ার করে টিকা কিনে আনেন।

আরও পড়ুন

পরে আবার ঠিক হয় মেয়েও টিকা দিয়েই বাড়ি যাবেন। তখন মেয়ে রুপা অন্য একটা গ্রুপের সাথে ভায়াল শেয়ার করেন। এভাবেই টিকা দিতে পারলেও গাইবান্ধা এলাকার বশির উদ্দিন টিকা না দিয়েই বাড়ি ফিরে যান। কারণ তার কাছে শুধু যাওয়ার ভাড়াটা ছিল। তার মত অনেকেই ১ম ,২য় এবং ৩য় ডোজের টিকা নিতে এসে এমন ভোগান্তিতে পড়েন।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে টিকাদান কেন্দ্রের নার্সরা জানান, সরকারি হাসপাতালের মধ্যে বগুড়া মোহাম্মদ আলী হাসপাতালের এই টিকাদান কেন্দ্র থেকে বিনামূল্যে জলাতঙ্কের ভ্যাকসিন দেওয়া হয়। চাহিদা অনুযায়ী সরবরাহ না থাকায় প্রায়ই রোগী ও স্বজনদের তোপের মুখে পড়তে হয় তাদের। রোগীরা যদি ভ্যাকসিন কিনে আনেন আমরা যত্নসহকারে করে টিকা পুশ করে দিই। এব্যাপারে হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. কাজী মিজানুর রহমান করতোয়া’কে জানান, আমাদের যে ভ্যাকসিন সরবরাহ দেওয়া হয় তা খুব সামান্য।

বাধ্য হয়ে কুকুর ও বিড়াল, শিয়ালের কামড়ে আক্রান্তদের ভ্যাকসিন কিনে আনতে হচ্ছে। তিনি বলেন, ভ্যাকসিনের বরাদ্দ বাড়াতে সিভিল সার্জনের সহায়তায় আমরা চেষ্টা করছি। বরাদ্দ না পেলে আমরা দু:খ প্রকাশ ছাড়া কিছুই করতে পারি না। সরবরাহ এলে আবারও রোগীদের সরকারীভাবে এই টিকা দেয়া হবে জানিয়েছেন এই কর্মকর্তা।

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

বগুড়ার শাজাহানপুর ভূমি অফিস পরিদর্শন করলেন জেলা প্রশাসক হোসনা আফরোজা

প্রথম একসঙ্গে ‘ইত্যাদি’র মঞ্চে হাবিব-প্রীতম

আইপিএলের প্রথম পর্বে নেই ১১ কোটি রুপির গতিতারকা

সিনেমায় নয়, এখন নাটকেই বেশি ব্যস্ত সারা জেরিন

বগুড়ার শেরপুরে চোরচক্রের ২ সদস্য গ্রেফতার : ২৯টি  ব্যাটারি ও ১০৫টি গ্যাস সিলিন্ডার উদ্ধার

কাবাডিতে ব্রোঞ্জ জয়ি মেয়েদের জন্য ক্রীড়া উপদেষ্টার অনুদান