খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে বিরলের গোবিন্দপুরের মানুষের আক্ষেপ

খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে বিরলের গোবিন্দপুরের মানুষের আক্ষেপ

দিনাজপুর জেলা প্রতিনিধি : আপসহীন নেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার চিরবিদায়ে কোটি মানুষের সাথে কাঁদছে দিনাজপুর জেলার বিরল উপজেলার গোবিন্দপুর গ্রামের আবাল বৃদ্ধ বণিতা। গতকাল মঙ্গলবার বেগম খালেদা জিয়ার চির বিদায়ের খবর ওই গ্রামটিতে পৌঁছালে নিরব, নিস্তব্ধ হয়ে পড়েন গ্রামের মানুষ।

১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধে বেগম খালেদা জিয়ার বাবা ইস্কান্দার মজুমদার, মা তৈয়বা মজুমদার, ছোট ভাই সাঈদ ইস্কান্দার ও শামীম ইস্কান্দার, বড় বোন সেলিনা ইসলাম বিউটি ও তার দুই ছেলে শাহরিন ইসলাম চৌধুরী তুহিন, সাইফুল ইসলাম চৌধুরী ডিউকসহ পরিবারের সদস্যরা বিরল উপজেলার বড় গোবিন্দপুর গ্রামে হাসির উদ্দিন, মাইন উদ্দিন ও রমজান আলীর বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছিলেন।

বেগম খালেদা জিয়ার ছোট ভাই ইস্কান্দার মজুমদারের বন্ধু বড় গোবিন্দপুর গ্রামের ওই বাড়ির সন্তান মিনহাজ উদ্দিন আহমেদ পাক হানাদার বাহিনীর আক্রমণের হাত থেকে তাদের রক্ষা করতে খালেদা জিয়ার বাবা-মাসহ পরিবারের সদস্যদের রাতের অন্ধকারে এই গ্রামে নিয়ে গিয়ে নিরাপদ আশ্রয়ের ব্যবস্থা করেছিলেন। যুদ্ধ শেষ না হওয়া পযন্ত তারা দীর্ঘ ৯ মাস ওই গ্রামের মানুষের তত্ত্বাবধানে নিরাপদে থেকেছেন।

আজ বুধবার (৩১ ডিসেম্বর) বড় গোবিন্দপুর গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, নিরব,  নিস্তব্ধ, হতাশা, কান্না দুঃখ বেদনায় গ্রামের মানুষ। বড় গোবিন্দপুর গ্রামের মৃত রমজান আলীর ছেলে ৭২ বছর বয়সের বৃদ্ধ আবু সুলতানের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, মহান স্বাধীনতাযুদ্ধ চলাকালীন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার বাবা-মা ও পরিবারের সদস্যরা ওই গ্রামে দীর্ঘ ৯ মাস ছিলেন।

হাসির উদ্দিনের বড় মেয়ে বেগম মোস্তফা কুদ্দুস বেলি বলেন, ১৯৯১ সালে দিনাজপুর সার্কিট হাউসে আমি ও আমার স্বামী আব্দুল কুদ্দুস দেখা করতে গেলে তিনি জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারসহ বিএনপি নেতাকর্মীদের সামনেই বলে ছিলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন বিরল উপজেলার বড় গোবিন্দপুর গ্রামে আমার বাবা-মা ও পরিবারের সদস্যরা নিরাপদ আশ্রয় ছিলেন।’

এই সুবাদে ও কৃতজ্ঞতায় দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ওই গ্রামের খোঁজখবর রাখতেন। গোবিন্দপুর গ্রামের মানুষ খুব গর্ব করে বলতেন, দিনাজপুরের মেয়ে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া আমাদের খোঁজখবর রাখেন।

গতকাল মঙ্গলবার চির বিদায় নিয়ে চলে গেলেন দেশনেত্রী বিএনপি’র চেয়ারপারসন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া। আমাদের এই গোবিন্দপুর গ্রামের মানুষের খোঁজ নেওয়ার আর কেউ থাকলো না। এ গ্রামের মানুষ এতিম হয়ে গেল।

এ বেদনা দুঃখ ও ভারাকান্ত মন নিয়ে আব্দুল হাই (৭৫), আরিফুল হক(৪০), জাহাঙ্গীর আলমসহ গ্রামবাসীরা শুধু আহাজারি করে বলছিলেন- আমাদের খোঁজ নেয়ার আর কেউ থাকলো না। চিরতরে বিদায় নিয়ে চলে গেলেন বেগম খালেদা জিয়া, আমরা হয়ে গেলাম এতিম।

পোস্ট লিংক : https://karatoa.com.bd/article/152272