বিয়ে করা সুন্নত নাকি ফরজ?
প্রশ্ন: বিয়ে করা সুন্নত নাকি ফরজ?
উত্তর: ইসলাম বিয়েকে উৎসাহিত করেছে। সাধারণ অবস্থায় কোনো প্রতিবন্ধকতা না থাকলে, অন্যের হক নষ্ট হওয়া বা হারামে লিপ্ত হওয়ার আশংকা না থাকলে বিয়ে করা সুন্নত।
রাসুল (সা.) বলেছেন, বিয়ে করা আমার সুন্নত। যে ব্যক্তি আমার সুন্নত মোতাবেক কাজ করলো না সে আমার নয়। আপনারা বিয়ে করুন, আমি আপনাদের সংখ্যাধিক্য নিয়ে অন্যান্য উম্মাতের সামনে গর্ব করবো। যার সামর্থ্য আছে সে যেন বিয়ে করে আর যার সামর্থ্য নেই সে যেন রোজা রাখে। কারণ রোজা তার জন্য জৈবিক উত্তেজনা প্রশমনকারী। (সুনানে ইবনে মাজা: ২৩৮৩)
কিন্তু বিয়ে করতে সক্ষম কোনো ব্যক্তি যদি বিয়ে না করলে গুনাহে জড়িয়ে পড়ার আশংকা করে, তাহলে তার ওপর বিয়ে করা ফরজ হয়ে যায়। কুরতুবি (রহ.) বলেন, যে সক্ষম ব্যক্তি অবিবাহিত থাকলে গুনাহে জড়িয়ে পড়ার আশংকা করে এবং এই আশংকা বিয়ে ছাড়া অন্য কোনো উপায়ে দূরীভূত হওয়ার সম্ভাবনা না থাকে, তাহলে তার ওপর বিয়ে করা ফরজ; এতে কোন মতভেদ নেই।
বিয়ে না করার কারণে কেউ যদি হারাম দৃষ্টি, স্পর্শ বা চুমু খাওয়ার মাধ্যমে পাপে জড়িয়ে পড়ে, তার ওপর বিয়ে করা ফরজ। কেউ যদি প্রবল আশংকা বোধ করে যে বিয়ে না করলে সে ব্যভিচারের মতো হারাম কাজে লিপ্ত হবে, তার ওপরও বিয়ে করা ফরজ। কেউ যদি মনে করে যে গুনাহে জড়িয়ে পড়ার আশংকা সে করছে, বিয়ে করলেও তা পুরোপুরি কাটবে না, তবুও গুনাহের সম্ভাবনা কমানোর জন্য বিয়ে করা তার ওপর ফরজ থাকবে।
বিয়ে করার সামর্থ্য না থাকলে নিজেকে সংযত রেখে সামর্থ্য অর্জনের চেষ্টা করবে, আল্লাহ নিজের অনুগ্রহে তাকে অভাবমুক্ত করবেন ইনশাআল্লাহ। আল্লাহ তাআলা বলেন, আর যাদের বিয়ের সামর্থ্য নেই আল্লাহ তাদেরকে নিজ অনুগ্রহে অভাবমুক্ত না করা পর্যন্ত তারা যেন সংযম অবলম্বন করে। (সুরা নুর: ৩৩)
বিয়ে করা অনেকের জন্য মাকরুহ, অনেকের জন্য নিষিদ্ধও বটে। বিয়ে করলে মাকরুহ কাজে লিপ্ত হওয়া অবশ্যম্ভাবী হলে তার জন্য বিয়ে করা মাকরুহ, হারাম কাজে লিপ্ত হওয়া অবশ্যম্ভাবী হলে তার জন্য বিয়ে করা হারাম। যেমন কেউ যদি এত যৌনশক্তিহীন হয় যে সে মনে করে বিয়ের পর সে তার ফরজ দায়িত্ব-কর্তব্য পালন করতে পারবে না, তাহলে তার জন্য বিয়ে করা নিষিদ্ধ।
পোস্ট লিংক : https://karatoa.com.bd/article/151635