বগুড়ার সোনাতলায় মা-মেয়ের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার: স্বামী লাপাত্তা

বগুড়ার সোনাতলায় মা-মেয়ের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার: স্বামী লাপাত্তা

সোনাতলা (বগুড়া) প্রতিনিধি : সোনাতলায় আজ শুক্রবার (২৬ ডিসেম্বর) উপজেলার জোড়গাছা ইউনিয়নের শিচারপাড়া গ্রাম থেকে পুলিশ মা-মেয়ের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করেছে। নিহতরা হলেন চায়না বেগম (৩২) ও তার মেয়ে খাদিজা খাতুন (১৩)। এ ঘটনার পর থেকে চায়নার স্বামী কামরুল ইসলাম লাপাত্তা হয়েছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে,সোনাতলার জোড়গাছা ইউনিয়নের শিচারপাড়া গ্রামের মৃত ছায়েদ আলী মুন্সির ছেলে শিচারপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দপ্তরি-কাম-নৈশ প্রহরী কামরুল ইসলামের সাথে ১৬/১৭ বছর আগে একই উপজেলার দিগদাইড় ইউনিয়নের সৈয়দ আহম্মদ কলেজ (বটতলা) এলাকার তারাজুল ইসলামের মেয়ে চায়না বেগমের বিয়ে হয়।

তাদের দাম্পত্য জীবনে ১৩ বছরের কন্যা সন্তান রয়েছে। খাদিজা একই এলাকার শিচারপাড়া বুলজান উচ্চ বিদ্যালয়ের ৮ম শ্রেণীর মেধাবী শিক্ষার্থী। বিয়ের পর থেকেই তাদের দাম্পত্য জীবনে অভাব অনটনের কারনে কলহ বিবাদ লেগেই থাকতো। কারনে অকারনে গৃহবধু চায়নার ওপর নেমে আসতো স্বামীর অমানুষিক নির্যাতন। অভাব অনটন ওই পরিবারের যেন নিত্য সঙ্গী।

স্থানীয়রা জানান, কামরুল ইসলাম কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামীলীগের একজন সক্রিয় কর্মী। ২০২৪ সালের ৫ আগষ্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর রাজনৈতিক মামলায় জড়িয়ে পড়েন কামরুল ইসলাম। এজন্য তিনি পালিয়ে থাকতেন। তবে মাঝে-মধ্যে তিনি বাড়িতেও আসতেন। এ অবস্থায় আজ শুক্রবার (২৬ ডিসেম্বর) ঘটে যায় তার পরিবারে এই মর্মান্তিক ঘটনা। গতকাল  শুক্রবার বাদ জুমা ওই গ্রামের লোকজন মা-মেয়ের ঝুলন্ত লাশ ঘরের মধ্যে দেখতে পেয়ে পুলিশকে সংবাদ দেয়। এরপর পুলিশ লাশ দুটি উদ্ধার করে।

পুলিশ জানিয়েছে, মা-মেয়ের ঝুলন্ত লাশটি যে ঘরে ছিল, সেই ঘরের তীরের সাথে নাইলনের দড়ি দিয়ে তাদের মা-মেয়ের লাশ ঝুলানো অবস্থায় ছিল। এ বিষয়ে চায়না বেগমের বাবা তারাজুল ইসলাম বলেন, বিয়ের পর থেকে কারনে অকারনে জামাই কামরুল ইসলাম মেয়ে চায়নার উপর অমানুষিক নির্যাতন করতো। একসময় তাদের দাম্পত্য জীবনে বিচ্ছেদ ঘটলেও মেয়ের অনুরোধে পুনরায় তাদের সংসার বাঁধে।

স্থানীয় লোকজন বলেন, চায়না ও কামরুল ইসলামের সংসারে ছিল অভাব অনটন নিত্যসঙ্গী। পাড়া-প্রতিবেশীর নিকট ধারদেনা করে চলতো তার সংসার। এ ঘটনা পর তাৎক্ষণিক সহকারী পুলিশ সুপার শিবগঞ্জ সার্কেল, বগুড়া রবিউল ইসলাম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। তবে তিনি এ বিষয়ে তাৎক্ষণিক কিছু বলতে চাননি।

এ বিষয়ে সোনাতলা থানার অফিসার ইনচার্জ কবির হোসেন বলেন, তাৎক্ষণিক এ সম্পর্কে বলা কঠিন। ধারনা করা হচ্ছে মা-মেয়ে আত্মহত্যা করতে পারেন। তবে মৃত্যুর সঠিক কারন জানতে ময়না তদন্তের জন্য আজ সকালে দুজনের লাশ বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হবে। তিনি আরও বলেন, ওই বাড়িতে কামরুল ইসলামের অসুস্থ মা ছাড়া কেউ নেই। ওই ঘটনার পর থেকে কামরুল গা ঢাকা দিয়েছে।

পোস্ট লিংক : https://karatoa.com.bd/article/151622