বগুড়ার দুপচাঁচিয়ায় পিন্টু হত্যার রহস্য উন্মোচিত
স্টাফ রিপোর্টার : বগুড়ার দুপচাঁচিয়ায় আলোচিত পিন্টু আকন্দকে অপহরণ কর হত্যার রহস্য উন্মোচিত হয়েছে। অনলাইনে জুয়া খেলার মুদ্রা কেনাবেচার ১০ লাখ টাকা নিয়ে দ্বন্দ্বে বন্ধুর হাতে খুন হন দুপঁচাচিয়া বাজার এলাকার ব্যবসায়ী পিন্টু আকন্দ (৩৮)। এ হত্যার ঘটনায় পুলিশ চারজনকে গ্রেফতার করলেও মুল আসামীরা এখনও অধরা।
গ্রেফতার চারজন হলেন, মাইক্রোবাস চালক সানোয়ার (৪০), সাকিব (৩৫), এনামুল (৩৮) ও বাবলু মিয়া(৪০)। গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে এনামুল ও বাবলু মিয়া হত্যার নেপথ্যে ঘটনার বর্ননা দিয়ে আদালতে স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। অপর দুইজন সানোয়ার ও সাকিব পুলিশ রিমান্ডে আছেন।
গত ২২ ডিসেম্বর রাত সোয়া ৯ টার দিকে দুপচাচিয়া বাজার এলাকায় লোটো শো- রুমের ব্যবস্থাপক পিন্টু আকন্দকে তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে টেনে হেঁচড়ে বের করে একটি মাইক্রোবাস যোগে তুলে নিয়ে যায় চার যুবক।
ওই রাতেই আদমদিঘী উপজেলার কোমার ভোগ গ্রামের একটি রাস্তায় মাইক্রোবাস থেকে পিন্টু আকন্দের লাশ পুলিশ উদ্ধার করে। এসময় দুর্বৃত্তরা পালিয়ে গেলেও পুলিশ মাইক্রোবাসসহ চালক সানোয়ারকে আটক করে। পরে সানোয়ারের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী মাইক্রোবাস ভাড়ায় সহযোগিতাকারী সাকিবকে গ্রেফতার করে। এছাড়াও আদমদিঘী উপজেলার শালগ্রাম থেকে এনামুল ও জিনইর গ্রাম থেকে বাবলুকে গ্রেফতার করে।
গ্রেফতারকৃতদের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী পুলিশের একটি সুত্র জানায়,নিহত পিন্টু আকন্দের ঘনিষ্ট বন্ধু দুপচাচিয়া উপজেলার ডিম শহর এলাকার জুয়েল ও সজিব। তাদের মাধ্যমে নিহত পিন্টু অনলাইনে জুয়ার খেলার মুদ্রা বিট কয়েন এবং জুয়া খেলার অ্যাপ ও সফটওয়্যার কেনা বেচা করতেন। সম্প্রতি বিট কয়েন কেনা -বেচার ১০ লাখ টাকা নিয়ে জুয়েল সজিবের সাথে পিন্টু আকন্দের বিরোধ সৃষ্টি হয়। বিরোধ নিষ্পত্তির জন্য দুই সপ্তাহ আগে শালিস বৈঠক করেও বিরোধ নিষ্পত্তি করা যায়নি।
এনামুল ও বাবলুর জবানবন্দি অনুযায়ী সাকিব ডিবি পুলিশ হিসাবে আসামি ধরতে রাজশাহী যাবে এমন কথা চালক সানোয়ারকে বলে মাইক্রোবাসটি ভাড়া করে। সেই মাইক্রোবাসে জুয়েল,সজীব মুক্তার ও জোবায়ের লোটো- শো- রুম থেকে পিন্টু আকন্দকে মাইক্রোবাসে তুলে নেয়। তাদের উদ্দেশ্যে ছিল পিন্টু আকন্দকে এনামুল ও বাবলুর কাছে নিয়ে গিয়ে আটকে রেখে ১০ লাখ টাকা আদায় করবে।
পিন্টু আকন্দকে মাইক্রোবাসে উঠানোর পর চিৎকার শুরু করলে তার মুখ স্কচটেপ দিয়ে পেঁচিয়ে মাইক্রোবাসের পিছনের সিটে ফেলে রাখে। আদমদিঘী উপজেলার শালগ্রামে এনামুল ও বাবলুর কাছে পৌঁছানোর পর দেখতে পায় পিন্টু আকন্দ মারা গেছে। এরপর লাশ অন্য কোথাও ফেলে দেয়ার জন্য মাইক্রোবাস নিয়ে আদমদিঘী উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের রাস্তায় ঘুরে বেড়ায়।
মাইক্রোবাসের মালিক জিপিএস’র মাধ্যমে গাড়ির গতিবিধি সন্দেহজনক এবং চালক ফোন রিসিভ না করায় তিনি গাড়িটি বন্ধ করে দেন। এরপরপরই তারা পিন্টু আকন্দের লাশ মাইক্রোবাসে ফেলে রেখে পালিয়ে যায়।
দুপচাচিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আফজাল হোসেন বলেন, পিন্টু আকন্দ হত্যার ঘটনায় তার স্ত্রী সাবিনাজ বেগম বাদি হয়ে থানায় মামলা করেছেন।
সেই মামলায় চারজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে দুইজন আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন। অপর দুইজন পুলিশ রিমান্ডে আছেন। মূল আসামি গ্রেফতারের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।
পোস্ট লিংক : https://karatoa.com.bd/article/151621