সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায় সরিষা ক্ষেতে সরিষা ও মধু উৎপাদন নিয়ে চিন্তিত কৃষক

সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায় সরিষা ক্ষেতে সরিষা ও মধু উৎপাদন নিয়ে চিন্তিত কৃষক

উল্লাপাড়া (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধি: সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া উপজেলায় দিগন্তব্যাপী ফসলের মাঠে সরিষার গাছ হলুদ ফুলে ছেয়ে গেছে। দূর থেকে মনে হয় যে, হলুদ গালিচা বিছিয়ে দিয়ে প্রকৃতি এক অপরূপ সাজে সজ্জিত হয়েছে।  যেদিকে তাকানো যায় শুধু হলুদ আর হলুদ। রঙিন প্রজাপতি ও মৌমাছি হলুদ ফুলে ঘুরে বেড়িয়ে আলিঙ্গন করে মধু সংগ্রহ ও পরাগয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।

মৌচাষিরা মধু সংগ্রহের জন্য সরিষা ক্ষেতের পাশে বসিয়ে মৌ বাক্স খাটি মধু সংগ্রহের নিবির তৎপরতা শুরু করেছে। সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ার মোহনপুর, উধুনিয়া, বাঙ্গালা, পূর্ণিমাগাঁতী, সলঙ্গা ইউনিয়ন চলনবিলের উল্লাপাড়ার বিরাট অংশ জুড়ে চাষ হয় সরিষার। এবছর উপজেলা ১৪টি ইউনিয়ন ও ১টি  পৌরসভায় বিভিন্ন জাতের সরিষার আবাদ হয়েছে।

উপজেলা কৃষি অফিসার সূবর্ণা ইয়াসমিন সুমী বলেন, উপজেলায় ব্যাপকহারে সরিষার আবাদ হয়েছে । এ বছর সরিষা চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ২৪হাজার ৫৭০ হেক্টর জমি। কৃষি বিভাগের কৃষি প্রণোদনা আওতায় বহু ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষকদের মাঝে বিনামূল্যে উচ্চ ফলনশীল সরিষা বীজ ও রাসায়নিক সার বিতরণ করা হয়েছে।

এ কারণে লক্ষ্য মাত্রার চেয়ে বেশি জমিতে সরিষা চাষ হচ্ছে। উল্লাপাড়া উপজেলা সরিষা চাষে সিরাজগঞ্জ জেলার শীর্ষে ও সারা দেশে তৃতীয় স্থানে। তিনি আরো বলেন, এবছর মধু খামারিরা অনেকেই আসছেন, এরই মধ্যে মৌমাছি বক্স বসিয়েছেন। তাদেরকে কৃষি কর্মকর্তাগণ মধু উৎপাদনে নানা পরামর্শ দিচ্ছেন।

মৌচাষি রফিকুল ইসলাম জানান, সরিষা উৎপাদনে মৌমাছি পরাগায়ন ঘটিয়ে সরিষার উৎপাদন বৃদ্ধিতে সহায়তা করে থাকে। আবহাওয়া অনুকুলে থাকলে  এ বছর রেকর্ড পরিমাণ খাটি মধু পাওয়া যাবে। এই মৌসুমে মধুর চাহিদা বেশি থাকে। দামও ভাল পাওয়া যায়। প্রতিটি মৌ বাক্সে একটি করে রাণী মৌমাছি রাখা হয়। এই রাণীকে ঘিরেই মৌমাছির সংখ্যা বাড়ে এবং বাক্সে মধুর পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়ে থাকে।

উধুনিয়ার কৃষক জমির উদ্দিন জানান, এ বছর অনেক টাকা পয়সা খরচ করে তিনি ৫ বিঘা জমিতে সরিষা চাষ করছেন। তার জমি রাস্তার ধারে হওয়ায় সরিষা ক্ষেতে ভ্রমণ ও প্রকৃতি প্রেমিকদের অত্যাচার বেড়ে গেছে। তারা হলুদের গালিচায় ছবি তুলতে গিয়ে সরিষা ক্ষেতের ক্ষতি করছে। অনুরোধ করলেও  মানতে চায় না। তাদের অত্যাচারে সরিষা চাষিরা অতিষ্ট হয়ে পড়েছে। সরিষা ক্ষেত বাঁচাতে বাধ্য হয়ে পাহারার ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

পোস্ট লিংক : https://karatoa.com.bd/article/151619