হাতিয়ার সংঘর্ষে ৫ জন নিহতের ঘটনায় মামলা

হাতিয়ার সংঘর্ষে ৫ জন নিহতের ঘটনায় মামলা

নোয়াখালীর হাতিয়া উপজেলার চরকিং ও সুখচর ইউনিয়ন সংলগ্ন মেঘনা নদীর জাগলারচরে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের ঘটনায় থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলায় ৩০ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা আরও ১০ থেকে ১৫ জনকে আসামি করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (২৫ ডিসেম্বর) দুপুরে নিহত মোবারক হোসেন শিহাবের চাচা ও নিখোঁজ শামছু গ্রুপের শামছুর ভাই আবুল বাশার বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেন।

মামলার বাদী আবুল বাশার জানান, সংঘর্ষের ঘটনায় নিহত তার ভাতিজা মোবারক হোসেন সিহাবের লাশ উদ্ধার ও ময়নাতদন্ত শেষে দাফন সম্পন্ন করতে সময় লাগায় মামলা দায়ের করতে কিছুটা বিলম্ব হয়েছে।

 

নিহতের মা ও শামছু বাহিনীর প্রধান মো. শামছুদ্দিন ওরফে শামছুর স্ত্রী মাহফুজা বেগম অভিযোগ করে বলেন, ‘স্থানীয় কিছু লোক আমার স্বামীকে চরে জমি দেওয়ার কথা বলে নিয়ে যায়। পরে আর তাকে ফেরত দেয়নি। খবর পেয়ে পরদিন আমার ছেলে শিহাব তার বাবাকে ফিরিয়ে আনতে জাগলারচরে যায়। কিন্তু সেও আর জীবিত ফিরে আসেনি।’

শামছুর বড় ছেলে ফখরুল ইসলাম বলেন, আমরা খবর পেয়েছি সেখানে বহিরাগত সন্ত্রাসীরা এখনো অস্ত্র নিয়ে মহড়া দিচ্ছে। প্রশাসন আমার বাবার লাশ উদ্ধারে অথবা সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তারে কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। ঘটনার মূল হোতাদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান তিনি।

 

উল্লেখ্য, গত মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর) সকালে জাগলারচর দখলকে কেন্দ্র করে আলাউদ্দিন ও শামছু বাহিনীর মধ্যে গোলাগুলি ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ সময় ঘটনাস্থল থেকে চার জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এছাড়া আহত একজনের মৃত্যু হয় হাসপাতালে। এই ঘটনায় শামছু বাহিনীর প্রধান শামছু এখনো নিখোঁজ রয়েছেন।

এই ঘটনায় নিহতদের মধ্যে রয়েছেন—হাতিয়া উপজেলার সুখচর ইউনিয়নের চর আমান উল্যাহ গ্রামের মো. মহিউদ্দিনের ছেলে মো. আলাউদ্দিন (৩৬), জাহাজমারা ইউনিয়নের পাইকবাধা এলাকার মো. শামছুদ্দিনের ছেলে মো. মোবারক হোসেন সিহাড (২১), হাতিয়া পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ড পশ্চিম লক্ষিদিয়া গ্রামের মৃত শাহী আলমের ছেলে হক সাব (৫৫), চানন্দী ইউনিয়নের মান্নান নগর এলাকার মৃত সেকুর ছেলে কামাল উদ্দিন (৩৮) এবং নোয়াখালীর সুবর্ণচর উপজেলার চরবাটা ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ড দক্ষিণ চর মজিদ এলাকার জয়নাল আবেদীনের ছেলে আবুল কাশেম (৫৭)।

আহতদের মধ্যে মো. সোহরাব (২৫) হাতিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তিনি নিঝুমদ্বীপ ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের খবির উদ্দিনের ছেলে। অন্য আহতরা নোয়াখালী সদর হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন বলে জানা গেছে।

এ বিষয়ে হাতিয়া থানার ওসি সাইফুল আলম বলেন, ‘নিখোঁজ শামছুর ভাই ও নিহত শিহাবের চাচা আবুল বাশার বাদী হয়ে থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। মামলার পরিপ্রেক্ষিতে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে এবং আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলমান রয়েছে।’

পোস্ট লিংক : https://karatoa.com.bd/article/151479