বাবাকে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে প্রেমিককে দিয়ে খুন!
আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ঘটনাটি ভারতের। দেশটির গুজরাট রাজ্যের ভদোদরায় কিশোরী মেয়ের প্রণয়ঘটিত সম্পর্ক মেনে নেননি এক বাবা। শাসন করেছিলেন মেয়েকে। রাগের চোটে বাবাকে ছক কষে খুন করলেন ১৭ বছরের ওই মেয়ে। সাহায্য নিলেন প্রেমিক এবং প্রেমিকের বন্ধুর।
পুলিশের বরাত দিয়ে স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সপ্তাহ খানেক আগে শানা চাবড়া নামে এক ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধার হয় তার বাড়ি থেকে। তদন্তে উঠে আসে শানাকে ছুরি দিয়ে আঘাত করে খুন করা হয়েছে। শরীরে বেশ কয়েকটি ক্ষতচিহ্ন পাওয়া যায়। পাশাপাশি ময়নাতদন্তের রিপোর্টে জানা যায়, খুনের আগে ঘুমের ওষুধ খাওয়ানো হয়েছিল শানাকে।
তদন্তে উঠে আসে ওই ব্যক্তির খুনের নেপথ্যে তার কিশোরী কন্যা-সহ তিনজন রয়েছে। ইতোমধ্যে দুই যুবককে গ্রেফতার করা হয়েছে। মেয়েটিকে পাঠানো হয়েছে সরকারি সেফ হোমে।
পুলিশ জানিয়েছে, শানার ১৭ বছরের মেয়ে রঞ্জিত গজেন্দ্রভাই বাঘেলা নামে বছর চব্বিশের এক যুবকের সঙ্গে প্রেম করছিল। সে কথা জানতে পারে রাগারাগি করেন শানা। কিন্তু বারণ শোনেনি মেয়ে। গত জুলাই মাসে প্রেমিকের হাত ধরে বাড়ি থেকে পালায় সে। এরপর থানায় অভিযোগ করেন বাবা। মেয়ের প্রেমিকের বিরুদ্ধে পকসো আইনে মামলা করেন। কিছু দিন পরে ধরা পড়েন রঞ্জিত। পরে জামিনও পেয়ে যান।
জেল থেকে বেরিয়ে প্রেমিকার বাবাকে ‘জব্দ’ করতে নানা ফন্দি আঁটেন ওই যুবক। প্রেমিকাও সঙ্গ দেন। শেষমেশ তারা সিদ্ধান্ত নেন তাকে খুন করবেন। শুরু হয় পরিকল্পনা।
গত ১৬ ডিসেম্বর রাতে খাওয়া-দাওয়ার সময় বাবা-মাকে মাদক খাওয়ানোর চেষ্টা করে মেয়ে। কিন্তু ব্যর্থ হয়। এরপর খাবারে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে দেয় সে। ওই খাবার খেয়ে গভীর ঘুমে তলিয়ে যান শানা। তখন প্রেমিক এবং তার এক বন্ধুকে বাড়িতে ডাকে মেয়েটি। দুই যুবক ছুরি নিয়ে এগিয়ে যায় ওই ব্যক্তিকে খুন করবে বলে। মেয়ে ঘরের জানালা দিয়ে দেখতে থাকে সেই দৃশ্য। বাবার মৃত্যু নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত সে ঠায় দাঁড়িয়ে থাকে জানলায়। এমনকি, বাবার খুনের পর প্রেমিককে পালিয়ে যেতেও সাহায্য করেছে নাবালিকা।
ভদোদরার জেলা পুলিশ সুপার সুশীল আগরওয়াল বলেন, ‘‘মৃতের মেয়ে তিন মাস ধরে বাবাকে খুনের ছক কষছিল। কারণ, তার প্রেমের সম্পর্কে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন বাবা। মেয়েকে শাস্তি দিতে ঘরে বন্ধ করে রাখতেন তিনি। আবার যেন সে প্রেমিকের সঙ্গে পালাতে না পারে সেজন্য সদা সতর্ক ছিলেন বাবা।”
পুলিশ সুপার আরও জানান, মেয়েটির প্রেমিক একটি পাঁপড় কারখানায় কাজ করতেন। সেই যুবক এবং তার বন্ধুকে খুনের অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে। খুনে ব্যবহৃত অস্ত্রও উদ্ধার হয়েছে। সূত্র: এনডিটিভি, দ্য ইকোনমিক টাইমস
পোস্ট লিংক : https://karatoa.com.bd/article/151045