চোখের পলকে ফোনের চার্জ শেষ হচ্ছে, সমাধান করুন নিজেই

চোখের পলকে ফোনের চার্জ শেষ হচ্ছে, সমাধান করুন নিজেই

স্মার্টফোনের ব্যাটারি দ্রুত শেষ হয়ে যাওয়া এখন প্রায় সবারই পরিচিত সমস্যা। অনেকেই ১০০ শতাংশ চার্জ নিয়ে ঘর থেকে বের হন, কিন্তু দুপুর গড়াতেই ফোন চার্জ দেওয়ার তাগিদ দিতে শুরু করে। তখন নতুন ফোন কেনা বা পাওয়ার ব্যাংক সঙ্গে রাখাই একমাত্র সমাধান বলে মনে হয়। বাস্তবে বিষয়টি তা নয়।

আসলে ফোনের ভেতরেই এমন কিছু সেটিংস আছে, যেগুলো ঠিকভাবে ব্যবহার করলে আলাদা কোনো ডিভাইস ছাড়াই সারাদিন ব্যাটারি টিকিয়ে রাখা সম্ভব। শুধু প্রয়োজন কিছু সাধারণ পরিবর্তন। আসুন জেনে নেওয়া যাক সেসব-

স্ক্রিনের সেটিংস ঠিক করুন

ফোনের ব্যাটারি সবচেয়ে বেশি খরচ হয় স্ক্রিন ব্যবহারে। স্ক্রিনের ব্রাইটনেস বেশি থাকলে খুব অল্প সময়েই চার্জ শেষ হয়ে যায়। তাই ব্রাইটনেস ৪০-৫০ শতাংশের মধ্যে রাখাই সবচেয়ে ভালো। পাশাপাশি অটো-ব্রাইটনেস চালু করলে ফোন আশপাশের আলো অনুযায়ী নিজে থেকেই উজ্জ্বলতা কম-বেশি করবে। এতে অপ্রয়োজনীয় পাওয়ার খরচ কমে যায়। এছাড়াও স্ক্রিন টাইমআউট ৩০ সেকেন্ড বা ১ মিনিটে সেট করলে ফোন ব্যবহার না থাকলে দ্রুত ডিসপ্লে বন্ধ হয়ে যায়, যা ব্যাটারি বাঁচাতে কার্যকর ভূমিকা রাখে।

ডার্ক মোড ব্যবহার করুন

যেসব ফোনে অ্যামোলেড বা ওএলইডি স্ক্রিন রয়েছে, সেখানে ডার্ক মোড ব্যবহার করলে ব্যাটারি সাশ্রয় হয়। কারণ এই ধরনের ডিসপ্লেতে কালো রঙের পিক্সেল খুব কম শক্তি ব্যবহার করে। ডার্ক মোড চালু করলে শুধু ফোনের সিস্টেম নয়, হোয়াটসঅ্যাপ, এক্স (টুইটার) ও ওয়েব ব্রাউজারের মতো অ্যাপেও শক্তি খরচ কমে আসে। নিয়মিত ডার্ক মোড ব্যবহার করলে সারাদিন ফোনের ব্যাটারি ধরে রাখা অনেক সহজ হয়।

ব্যাকগ্রাউন্ডে চলা অ্যাপ নিয়ন্ত্রণ করুন

অনেক অ্যাপ ব্যবহার না করলেও ব্যাকগ্রাউন্ডে সক্রিয় থাকে এবং নীরবে ব্যাটারি শেষ করতে থাকে। তাই ফোনের ব্যাটারি সেটিংসে গিয়ে যেসব অ্যাপের তাৎক্ষণিক আপডেট প্রয়োজন নেই, সেগুলোর ব্যাকগ্রাউন্ড অ্যাক্টিভিটি সীমিত করা উচিত। আইফোন ব্যবহারকারীদের ক্ষেত্রে অপ্রয়োজনীয় অ্যাপের জন্য ব্যাকগ্রাউন্ড অ্যাপ রিফ্রেশ বন্ধ রাখা ভালো। এতে ব্যাটারি ক্ষয় উল্লেখযোগ্যভাবে কমে যায়।

বেশি ব্যাটারি খরচ করা অ্যাপ শনাক্ত করুন

ফোনের ব্যাটারি ব্যবহারের পরিসংখ্যান দেখলে সহজেই বোঝা যায় কোন অ্যাপ সবচেয়ে বেশি শক্তি ব্যবহার করছে। যদি কোনো অ্যাপ অস্বাভাবিকভাবে বেশি ব্যাটারি খরচ করে, তাহলে সেটি আনইনস্টল করা বা তার ব্যবহার সীমিত করা জরুরি। অনেক খারাপভাবে অপ্টিমাইজ করা অ্যাপ অজান্তেই ফোনের চার্জ দ্রুত শেষ করে দেয়।

লোকেশন সার্ভিস সঠিকভাবে ব্যবহার করুন

লোকেশন বা জিপিএস সার্ভিস ব্যাটারি খরচের একটি বড় কারণ। বেশির ভাগ অ্যাপের লোকেশন পারমিশন ডিফল্টভাবে অলওয়েজ সেট করা থাকে, যা প্রয়োজন ছাড়াই জিপিএস চালু রাখে। এটি পরিবর্তন করে হোয়াইল ইউজিং দ্য অ্যাপে আনলে শুধু অ্যাপ ব্যবহারের সময়ই লোকেশন চালু হবে। এতে ব্যাটারি সাশ্রয় হবে এবং গোপনীয়তাও বাড়বে।

কানেক্টিভিটি ফিচার ব্যবস্থাপনা করুন

ওয়াই-ফাই, ব্লুটুথ, মোবাইল ডাটা ও এনএফসি ব্যবহার না করার সময় চালু থাকলে ফোন ক্রমাগত নেটওয়ার্ক খুঁজতে থাকে। এতে অতিরিক্ত পাওয়ার খরচ হয়। তাই প্রয়োজন না হলে এসব ফিচার বন্ধ রাখা উচিত। বিশেষ করে কম সিগন্যালের এলাকায় থাকলে এরোপ্লেন মোড চালু করলে ফোনের ব্যাটারি দ্রুত শেষ হওয়ার প্রবণতা কমে যায়।

ব্যাটারি সেভার মোড আগে থেকেই চালু রাখুন

অনেকেই ব্যাটারি একেবারে কমে গেলে ব্যাটারি সেভার মোড চালু করেন, যা কার্যকারিতার দিক থেকে দেরি হয়ে যায়। যদি জানা থাকে যে সারাদিন ফোন ব্যবহার করতে হবে, তাহলে ৫০ শতাংশ চার্জ থাকতেই ব্যাটারি সেভার মোড চালু করা ভালো। এতে ব্যাকগ্রাউন্ড অ্যাক্টিভিটি কমে যায় এবং ফোনের পারফরম্যান্স ব্যালান্স করে ব্যাটারি ব্যাকআপ ৩-৫ ঘণ্টা পর্যন্ত বাড়ানো সম্ভব হয়।

পোস্ট লিংক : https://karatoa.com.bd/article/150829