৩০০ আসনে প্রার্থী দেয়ার ঘোষণা জাতীয় পার্টির
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ৩০০ আসনে প্রার্থী দেয়ার ঘোষণা দিয়েছেন জি এম কাদেরের নেতৃত্বাধীন জাতীয় পার্টির (জাপা) মহাসচিব শামীম হায়দার পাটোয়ারী।
বুধবার (১৭ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় কাকরাইলে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেন তিনি।
শামীম হায়দার পাটোয়ারী বলেন, আইনশৃঙ্খলার যে পরিস্থিতি, আর সরকারের লোকজনের হুমকি-ধমকির মধ্যে কোনোভাবেই সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব না। সরকার রাতের ভোট অথবা দিনের ভোট অথবা ভোটের পরে ভোট অথবা মিডিয়া ক্যু অথবা মিডিয়া ভোট করতে পারে।
তিনি বলেন, দেশের বর্তমানে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অত্যন্ত হতাশাব্যঞ্জক। আমরা যতগুলো ভোট দেখেছি, ১২টি ভোটের মধ্যে ৯টিতে জাতীয় পার্টি অংশগ্রহণ করেছে। কোনো ভোটের দুই মাস আগে এত খারাপ আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ছিল বলে আমার মনে হয় না। আমরা দেখেছি উত্তেজনার পারদ বাড়ছে এবং সে পারদটি কমানোর জন্য সরকার নির্বাচন কমিশন বা অন্যান্য স্টেকহোল্ডার যথাযথ ভূমিকা নিচ্ছে না।
জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় সভায় সবার মতামতের ভিত্তিতে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে জানিয়ে মহাসচিব বলেন, ‘আমরা মনে করি প্রতিনিয়ত পথ পরিবর্তন হতে পারে। আমরা আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, সেনাবাহিনী প্রশাসনকে সুষ্ঠু ভোটের জন্য আহ্বান জানাচ্ছি। আহ্বান জানাচ্ছি যেন সকলে মিলে একটি ভোটের পরিবেশ করে। আহ্বান জানাচ্ছি, সকলে মিলে যেন একটা সমঝোতা করে, সকলে মিলে যেন একটা ঐকমত্য সৃষ্টি করে।
ভোট সুষ্ঠু না হলে দেশে ‘গৃহযুদ্ধ’ হবে মন্তব্য করে শামীম পাটোয়ারী বলেন, ঐকমত্য ছাড়া দেশের স্বাধীনতা, দেশের সার্বভৌমত্ব, অভ্যন্তরীণ আইন শৃঙ্খলা হুমকির মুখে পড়বে। একটা গৃহযুদ্ধের আশঙ্কা আমরা করছি সামনের ভোটটি যদি সুষ্ঠ না হয়, গ্রহণযোগ্য না হয়।
তিনি বলেন, তফসিল পিরিয়ডের পরে প্রশাসন চলে যাবে নির্বাচন কমিশনের কাছে। অথচ আমরা দেখলাম তফসিল দেয়ার পরে ওসমান হাদিকে গুলি করা হয়েছে। আমরা দেখলাম ১৬ ডিসেম্বরের অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে একটা কুচক্রী মহল আমাদের নওগাঁর অফিস ভাঙচুর করেছে। পুলিশ প্রশাসন সেখানে কোনো সহযোগিতা করতে পারেনি। তার মানে পুলিশ প্রশাসন এখনো নিজেকে নিরপেক্ষ ভাবতে পারছে না। পুলিশ প্রশাসন এখনো নিজেদের জঙ্গিদের ওপরে ভাবতে পারছে না। তাই যদি হয়ে থাকে, সুষ্ঠু নির্বাচনের সম্ভাবনা একটু একটু করে স্তিমিত হয়ে যাচ্ছে।
সংবাদ সম্মেলনে জাতীয় পার্টির এই নেতা বলেন, তাদের দল ‘গভীরভাবে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করার পর’ পরিস্থিতি দেখে ভবিষ্যৎ সিদ্ধান্তগুলো নেবে। প্রশাসনকে শক্তিশালী না করতে পারলে একটি ভজঘট নির্বাচন হতে পারে, একটি দুর্বল ম্যান্ডেটের নির্বাচন হতে পারে এবং রাজনৈতিক সমাধান না হয়ে ভবিষ্যৎ নির্বাচন রাজনৈতিক সংকটের কারণ হতে পারে।
তিনি বলেন, ইতিহাস কখনোই নির্বাচন কমিশন এবং সরকারকে পক্ষপাতিত্বের দায় থেকে অব্যাহতি দেবে না। এই নির্বাচনে নির্বাচন কমিশনের সদিচ্ছা, প্রচেষ্টাই নির্ধারণ করবে—ভবিষ্যতে নির্বাচন কমিশনারদের গলায় ফুলের মালা পড়বে, নাকি জুতার মালা পড়বে।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন, পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য হাজী সাইফুদ্দিন আহমেদ মিলন, রেজাউল ইসলাম ভুইয়া, আলমগীর সিকদার লোটন, এমরান হোসেন মিয়া, মো. আতিকুর রহমান আতিক, শেরীফা কাদের, ইঞ্জিনিয়ার ইকবাল হোসেন, এইচ এম শাহরিয়ার আসিফ, আমিনুল ইসলাম ঝন্টু, এস এম ইয়াসির ইকবাল হোসেন তাপস, আবু তাহের, আজমল হোসেন লেবু, নুরুন্নাহার বেগম।
পোস্ট লিংক : https://karatoa.com.bd/article/150472