বিনোদনকেন্দ্রে ‘কুঁড়েঘর পাঠাগার’ 

বিনোদনকেন্দ্রে ‘কুঁড়েঘর পাঠাগার’ 

বেড়া (পাবনা) প্রতিনিধি : মোটা ও শক্তিশালী লোহার পাইপের ওপরে বসানো ছোট কুঁড়েঘরের মতো একটি স্থাপনা। ভেতরে কয়েকটি তাকে সাজানো আছে তিন শতাধিক বই। ঘুরতে আসা মানুষের জন্য এটি ক্ষুদ্র হলেও তা পরিপাটি একটি পাঠাগার। নাম ‘কুঁড়েঘর পাঠাগার’। পাবনার বেড়া পৌর এলাকার হুরাসাগর নদের পাড়ের জনপ্রিয় বেড়ানোর স্থান-পোর্ট এলাকার ব্যতিক্রম এই পাঠাগারটি হয়ে উঠেছে বেড়ার নতুন আড্ডাস্থল।

বেড়ার শিক্ষার্থীদের উদ্যোগে গড়া এই পাঠাগারটি গত বুধবার (১৯ নভেম্বর) উদ্বোধন করেন বেড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মোরশেদুল ইসলাম। এমন পাঠাগার গড়ে তোলার পেছনে তার উৎসাহ ও সহযোগিতা রয়েছে বলে শিক্ষার্থীরা জানান।

কুঁড়েঘর আকৃতির পাঠাগারটি স্থাপনের পর থেকেই এর প্রতি মানুষের আগ্রহ চোখে পড়ার মতো। বিকেল হতেই পাঠাগারের সামনে ভিড় বাড়তে থাকে। হুরাসাগর নদের পাড়ের সিঁড়িঘাটের দিকে তাকালেই দেখা যায়- কারও হাতে গল্পের বই, কেউ আবার শিশুতোষ বা ভ্রমণ কাহিনী নিয়ে বসে আছেন নদের হাওয়ায়। কেউ দাঁড়িয়ে বই দেখছেন, কেউ সিঁড়িতে বসে মনোযোগ দিয়ে পড়ছেন।

বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যা হওয়ার পর পাঠাগারটি যেন আরও জীবন্ত হয়ে ওঠে। পাঠাগারটির ওপরেই রয়েছে সড়কবাতি ও নিরাপত্তার জন্য সিসি ক্যামেরা। আলোর ব্যবস্থা থাকায় অন্ধকার নামলেও সেখানে পড়তে কারও অসুবিধা হয় না। শিশুসহ তরুণ-তরুণীরা বই হাতে নিয়ে সিঁড়িতে বসে কিংবা রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে পড়তে থাকেন।

বেড়ার আলহেরা একাডেমি স্কুল এন্ড কলেজের শিক্ষক ওমর সরকার বলেন, ‘এ ধরনের উদ্যোগ চমৎকার ও ব্যতিক্রমী। ঘুরতে এসে এভাবে বই পড়ার সুযোগ সত্যিই আনন্দের।’ বেড়া সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী মো. সৌরভ বলেন, সাধারণত এখানে এসে বন্ধুরা মিলে আড্ডা দেই। আজ বই হাতে নিয়ে বসতে পেরে অন্যরকম লাগছে। এটা আমাদের পোর্ট এলাকাকে আরও সুন্দর করে তুলেছে।’

সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা মেহেরাব হোসেন জানান, তারা বেশ কিছুদিন ধরেই নিজেদের মধ্যে বই পড়ার চর্চা বাড়ানোর চেষ্টা করছিলেন। তাদের মতে, স্মার্টফোনের অতিরিক্ত ব্যবহার তরুণদের পড়াশোনা থেকে দূরে সরিয়ে দিচ্ছে। এ অবস্থায় বই পড়ার অভ্যাস গড়ে তোলা জরুরি। সেই ভাবনা থেকেই এসেছে ‘কুঁড়েঘর পাঠাগার’- এর ধারণা।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মোরশেদুল ইসলাম বলেন, ‘ঘুরতে আসা মানুষের সামনে বই তুলে ধরার উদ্যোগ সত্যিই অসাধারণ। উদ্বোধনের পর থেকেই এটি বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। আমি এ ব্যাপারে যুক্ত শিক্ষার্থীদের ধন্যবাদ জানাই।’ 

পোস্ট লিংক : https://karatoa.com.bd/article/148102