বগুড়ার নন্দীগ্রামে নবান্ন উপলক্ষে ঐতিহ্যবাহী মাছের মেলা

বগুড়ার নন্দীগ্রামে নবান্ন উপলক্ষে ঐতিহ্যবাহী মাছের মেলা

নন্দীগ্রাম (বগুড়া) প্রতিনিধি : নবান্ন উৎসবকে কেন্দ্র করে নন্দীগ্রাম উপজেলার নন্দীগ্রাম হাট, ওমরপুর, রনবাঘা, পুন্ডিতপুকুর, হাটকড়ই ও ধুন্দার বাজারসহ বিভিন্ন এলাকায় বসেছে ঐতিহ্যবাহী মাছের মেলা। শ্বশুর বাড়িতে বড় মাছ নিয়ে যাওয়ার প্রাচীন রেওয়াজ থাকায় সকাল থেকেই ক্রেতাদের ব্যাপক ভিড় দেখা যায়।

একদিনেই এসব মেলায় প্রায় ৬০ থেকে ৭০ লাখ টাকার মাছ কেনাবেচা হয় বলে জানান ব্যবসায়ীরা। মেলায় দূরদূরান্ত থেকে বিক্রেতারা কাতলা, বোয়াল, রুই, চিতলসহ বড় আকারের মাছ নিয়ে আসেন। এবার ১২ থেকে ১৪ কেজি ওজনের বোয়াল, ৮ থেকে ১০ কেজি ওজনের কাতলা নজর কেড়েছে সবার। মেলাজুড়ে সুন্দর করে থরে থরে সাজানো ছিল হরেক রকমের মাছ। চলছে হাঁকডাক, দরদাম।

জানাগেছে প্রত্যেক বছর পহেলা অগ্রহায়ণের এইদিনে প্রতিবছর নবান্ন উৎসব পালন করা হয়। নবান্ন উপলক্ষে আয়োজিত মেলায় উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলে, মাছ খামারি ও ব্যবসায়ীরা মাছ নিয়ে হাজির হন মেলায়। উৎসব উপলক্ষে প্রতিটি বাড়িতে মেয়ে-জামাইসহ স্বজনদের দাওয়াত দেওয়া হয়।

এক হাজার থেকে ১২শ’ টাকা কেজি বোয়াল মাছ , ২০০ থেকে ৭০০ টাকা কেজি দরে বিগ্রেড ও সিলভার কার্প, রুই ও কাতলা ২৫০ থেকে ৭৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়। চিতল মাছ ওজন ভেদে ৮০০ থেকে ১২০০ টাকা, এছাড়াও আইড় ও শোল মাছ ৭০০ থেকে ১৬০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

মেলায় শীতকালীন সবজির আমদানি ছিল উল্লেখযোগ্য। প্রতিবারের মতো এবারের মেলাতেও ক্রেতা উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো।  মাছ কিনতে আসা বৈলগ্রামের মিঠু বলেন, যুগ যুগ ধরে অগ্রহায়ণ মাসের এই দিনে মাছের মেলা বসে। দিন যতই যাচ্ছে, মেলার ঐতিহ্য ততই বাড়ছে। আরেক ক্রেতা ইমন বলেন, মাছের সরবরাহ খুব ভালো।

দাম কিছুটা বেশি মনে হলেও প্রয়োজনীয় সব ধরনের মাছ পাওয়া যাচ্ছে। নন্দীগ্রাম কলেজপাড়ার ক্রেতা বিমল কুমার বলেন, আমাদের পূর্বপুরুষরা নবান্নে নতুন চালের ভাতের সাথে বড় মাছ রান্না করতেন। আমরা এখনও সেই প্রথা পালন করছি।

মাছের পাশাপাশি পিঠাপুলির আয়োজনও থাকে। মাছ বিক্রেতা মিলন জানান, মেলায় প্রায় শতাধিক মাছের দোকান বসেছে। প্রতিটি দোকানেই ৩০ থেকে ৪০ মণ করে মাছ বিক্রি হয়েছে। বিক্রেতা মিন্টু মিয়া বলেন, নবান্ন উৎসবকে কেন্দ্র করেই বড় মাছ আনা হয়। ক্রেতাদের ক্রয়ক্ষমতা বিবেচনায় মাছের দাম নির্ধারণ করা হয়।

পোস্ট লিংক : https://karatoa.com.bd/article/147030