রাজশাহীতে বিচারকের বাড়িতে ছেলেকে হত্যা, খুনি পূর্বপরিচিত
রাজশাহী প্রতিনিধি: রাজশাহী মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক আব্দুর রহমানের ছেলে তাওসিফ রহমান সুমনকে নিজ ফ্ল্যাটে ছুরিকাঘাতে হত্যা করেছে এক যুবক। এ ঘটনায় বিচারকের স্ত্রী তাসমিন নাহার লুসী গুরুতর আহত হয়েছেন। আহত অবস্থায় আটক করা হয়েছে হামলাকারী যুবককেও। আহত ওই যুবকের নাম লিমন মিয়া। তার বাড়ি গাইবান্ধা জেলায় বলে জানিয়েছে পুলিশ।
নগরীর তেরখাদিয়া ডাবতলা এলাকায় স্পার্ক ভিউ ভবনের ৫ম তলায় পরিবার নিয়ে বসবাস করতেন বিচারক আব্দুর রহমান। বৃহস্পতিবার (১৩ নভেম্বর) বিকেল পৌনে ৩ টার দিকে এই বাড়িতেই হামলার ঘটনা ঘটে। রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার আবু সুফিয়ান এ তথ্য নিশ্চিত করেন। হামলাকারী যুবকও বিচারক পরিবারের পূর্ব পরিচিত বলে পুলিশ জানতে পেরেছে।
পুলিশ ও স্থানীরা জানান, বৃহস্পতিবার বিকেল পৌনে ৩ টার দিকে লিমন মিয়া বিচারকের বাসায় প্রবেশ করে অতর্কিতভাবে হামলা চালায়। ধারালো অস্ত্রের কোপে তাওসিফ রহমান সুমন ঘটনাস্থলে গুরুতর আহত হন। আহত অবস্থায় বিচারকের স্ত্রী তাসমিন নাহারকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে ০৪ নম্বর ওয়ার্ডে ভর্তি করেন। আর হাসপাতালে নেয়ার পর তাওসিফ রহমান সুমনকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক।
এদিকে হামলাকারী যুবকও গুরুতর আহত অবস্থায় বর্তমানে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের একই ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন রয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে পুলিশ। তার আহত হওয়ার কারণ সম্পর্কে জানতে চাইলে রাজশাহী মহানগর পুলিশের উপ-কমিশনার গাজিউর রহমান জানান, আমরা প্রাথমিকভাবে ধারণা করছি, সেখানে দু’পক্ষের মধ্যে মারামারির ঘটনা ঘটেছে। এতে লিমনও আহত হন।
রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার আবু সুফিয়ান জানান, ঘটনাস্থলে তদন্তকারী দল কাজ করছে। হত্যার কারণ এখনও স্পষ্ট নয়, তবে প্রাথমিকভাবে পারিবারিক বা ব্যক্তিগত শত্রুতার সম্ভাবনা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, হামলাকারী লিমন মিয়া যেহেতু অজ্ঞান অবস্থায় আছে তাই এখনই কী কারণে এটি ঘটেছে সেটি বলা যাচ্ছে না। তবে আমরা তদন্ত করছি। এই ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
পুলিশ কমিশনার জানান, পূর্বের ঘটনার জেরে সুমনের মা তাসমিন নাহার লুসী সিলেটের জালালাবাদ থানায় গত ৬ নভেম্বর লিমন মিয়ার বিরুদ্ধে একটি জিডি করেছিলেন। সেখানে তিনি লিমনের বিরুদ্ধে বারংবার টাকা নেয়ার অভিযোগ করেন। টাকা না দিলে পরিবারের সদস্যদের মেরে ফেলার হুমকি দেয়ার বিষয়ে নিরাপত্তাহীনতার কথা উল্লেখ করেছিলেন। সেই বিরোধের জেরে এই ঘটনাটি ঘটেছে কিনা সেটি তদন্ত করা হচ্ছে বলে জানান পুলিশ কমিশনার।
পুলিশ কমিশনার আবু সুফিয়ান আরও জানান, গত ৬ নভেম্বর সিলেটের জালালাবাদ থানায় নিরাপত্তাহীনতার কথা উল্লেখ করে বিচারকের স্ত্রী ও তাওসিফের মা তাসমিন নাহার লুসী একটি জিডি করেছিলেন। সেই জিডিতে তিনি উল্লেখ করেছিলেন, কোয়ান্টাম ফাইন্ডেশনের সদস্য হওয়ায় লিমন মিয়ার সাথে পরিচয় হয়। পরিচয়ের পর সে মোবাইল নাম্বার নেয়। পরিবার আর্থিকভাবে কিছুটা দুর্বল হওয়ায় প্রায়ই লিমন আর্থিক সহযোগিতা নিত। একটা পর্যায়ে প্রতিনিয়ত সহযোগিতা চাইতো। এতে অপারগতা প্রকাশ করলে, সে তার ব্যবহৃত মোবাইল নাম্বার থেকে হুমকি ধমকি প্রদান করে।
পোস্ট লিংক : https://karatoa.com.bd/article/146466