শনিবার থেকে লাগাতার অবস্থান কর্মসূচির ঘোষণা প্রাথমিক শিক্ষকদের
সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকরা ১০ম গ্রেডে বেতন নির্ধারণ, উচ্চতর গ্রেড সমস্যার সমাধান এবং শতভাগ বিভাগীয় পদোন্নতি— এই তিন দফা দাবিতে আগামী শনিবার (৮ নভেম্বর) থেকে ঢাকার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে লাগাতার অবস্থান কর্মসূচি শুরু করার ঘোষণা দিয়েছেন। এই আন্দোলন চলবে দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত।
‘প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদ’ নামে চারটি শিক্ষক সংগঠনের মোর্চার ব্যানারে এই কর্মসূচি পালিত হবে। এতে নবীন শিক্ষকরাও অংশ নিচ্ছেন।
বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির (শাহিন-লিপি) সাধারণ সম্পাদক খায়রুন নাহার লিপি শুক্রবার দুপুরে জানান, শনিবার শহীদ মিনারে প্রায় ২০ হাজার শিক্ষক অবস্থান নেবেন। তিনি কর্মকর্তাদের আলোচনার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে বলেন, "আমাদের কথা তো বহুবার তাদের বলেছি, কাজ তো হয়নি। এবার রাজপথেই দাবি আদায় করে আমরা ফিরবো।"
বর্তমানে দেশে ৬৫ হাজার ৫৬৭টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রায় ৩ লাখ ৮৪ হাজার শিক্ষক কর্মরত আছেন। সম্প্রতি গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় প্রধান শিক্ষকদের বেতন ১১তম গ্রেড থেকে ১০ম গ্রেডে এবং সহকারী শিক্ষকদের ১৩তম গ্রেড থেকে ১২তম গ্রেডে উন্নীত করার কথা জানালেও সহকারী শিক্ষকরা তাতে সন্তুষ্ট নন।
খায়রুন নাহার লিপি ১০ম গ্রেডের দাবির যৌক্তিকতা তুলে ধরে বলেন, বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তা, নার্স, উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা, পুলিশের সাব-ইন্সপেক্টর এবং সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকরা স্নাতক বা সমমান ডিগ্রি নিয়ে ১০ম গ্রেড পান। কিন্তু সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকরা স্নাতক ও সমমান ডিগ্রির পাশাপাশি সিএনএড, বিপিএড বা বিটিপিটি কোর্স করেও পান ১৩তম গ্রেড। তাই তাদের এই বৈষম্য দূর করে ১০ম গ্রেড দিতে হবে।
নবীন শিক্ষকদের নেতা তালুকদার পিয়াসও এই দাবির প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন। তিনি বলেন, প্রাথমিক শিক্ষকরা দেশের ভবিষ্যৎ নাগরিক গঠনের প্রথম স্তরে কাজ করেন। শিক্ষার মূলভিত্তি যারা গড়ে দিচ্ছেন, সময়ের প্রেক্ষাপটে তাদের ১০ম গ্রেড পাওয়া যৌক্তিক ও ন্যায্য।
এদিকে, সহকারী শিক্ষকদের আরেকটি অংশ ‘প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক সংগঠন ঐক্য পরিষদের’ ব্যানারে সরকারের কাছে ১৫ নভেম্বর পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়েছে। তাদের দাবি মানা না হলে, তারা পর্যায়ক্রমে ২৩ ও ২৪ নভেম্বর অর্ধদিবস কর্মবিরতি, ২৫ ও ২৬ নভেম্বর পূর্ণদিবস কর্মবিরতি এবং ২৭ নভেম্বর প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করবেন। এরপরও দাবি আদায়ে দৃশ্যমান অগ্রগতি না হলে, ১১ ডিসেম্বর থেকে আমরণ অনশন কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দিয়েছে এই পরিষদ।